সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের প্রতিষ্ঠার ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইউপিডিএফের প্রধান প্রসিত খীসা এ আহ্বান জানান। একই সাথে তিনি বড়দিনের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে।
ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীনতা সপক্ষের দল দাবিদার দেশের লুটেরা নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠী পাহাড়ি জনগণের ওপর দমন-পীড়ন, হত্যা-ধর্ষণ-ভূমি বেদখল, বন-প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করলেও দেশের প্রকৃত গণতান্ত্রিক শক্তি তা অনুমোদন করে না।
পাহাড়ি ও চট্টগ্রামবাসীদের সাথে সুদূর অতীতের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আশির দশকে ফৌজি শাসকদের জ্বালাও-পোড়াও হত্যা-ধর্ষণ, বেআইনী সেটলার পুনর্বাসন, পাহাড়িদের ভিটেবাড়ি-জমি জমা বেদখল ও দাঙ্গা বাধিয়ে বিদ্বেষ ও হিংসা জাগিয়ে তোলার পূর্বে পাহাড়ি ও বাঙালি (চট্টগ্রামবাসী) সম্পর্ক বৈরী ছিল না। ব্রিটিশ আগ্রাসন প্রতিরোধ লড়াই ও রাণী কালিন্দীর সময়ে পাহাড়ি ও বাঙালিদের (চট্টগ্রামবাসী) সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও সংহতি প্রবাদ প্রতিম হয়ে রয়েছে। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার অধিবাসীদের পূর্বপুরুষরা আজও সে সব দিনের কথা স্মৃতিচারণ করে থাকে।
বিবৃতিতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ও বাইরে নাড়া দেয়া ১১ ডিসেম্বর পানছড়িতে বিপুল-লিটন-সুনীল ও রুহিন হত্যার প্রতিবাদে দেয়াল লিখন, পোস্টার-হ্যান্ডবিল প্রচার, গান-আবৃত্তি, সভা-সমাবেশের মাধ্যমে দেশের বিবেক গণতান্ত্রিক শক্তি খুনী ও তাদের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে যেভাবে সোচ্চার হয়েছেন। সরকারের প্রতি পার্বত্যবাসী আস্থা হারিয়েছে। এর মাধ্যমে পাহাড় ও সমতলের গণতন্ত্রকামী মানুষের সংগ্রামী মৈত্রী গড়ে উঠছে।
বিবৃতিতে পাহাড় ও সমতলের জনগণের সংগ্রামী মৈত্রী জোরদারের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ন্যায্য দাবি পূর্ণস্বায়ত্ত শাসন ও দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েমের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় পতাকা উত্তোলন, অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন, র্যালি- শিশু র্যালি, আলোচনা সভা, মতবিনিয়-চা চক্র ইত্যাদি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন পাহাড়ি গণ পরিষদ (পিজিপি), পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউিএফ)-এর এক পার্টি প্রস্তুতি সম্মেলনের মধ্য দিয়ে গঠিত হয় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.