টানা ৫ দিনে ভারী বর্ষনে রাঙামাটিতে ১৯৭টি স্পটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরণের পাহাড় ধসের সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া পাহাড় ধসে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরসহ ৩৮১টি বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত ও বিভিন্ন সড়কের ৭৫টি স্পটে পাহাড় ধস হয়েছে। পানিতে ভেসে গিয়ে একজন নিখোঁজসহ পাহাড় ধসের ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভারী বর্ষনের কারণে রাঙামাটি সদর সদরসহ ৯টি উপজেলায় পাহাড় ধসে ৩৮১টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর রয়েছে ১৩টি। এছাড়া জেলার বিভিন্ন সড়কের ৭৫টি স্পটে পাহাড় ধস হয়েছে ও ১৪টি কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কের ৯টি স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এসব স্থানে পাহাড় ধসে ১০জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সোমবার বরকল উপজেলার শুভলং ইউনিয়নের মাইসছড়ি এলাকায় স্রোতের পানিতে ভেসে গিয়ে সুমেন চাকমা(১৮) নামের এক যুবক নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া ১৯টি বিদ্যুতের খুটি ক্ষগ্রিস্ত হয়েছে। ৬৮৩ একর জমিতে ক্ষতিগ্রস্ত,৪৩টি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া পাহাড়ি ঢলের কারণে আকস্মিক বন্যায় ১২৪টি ঘর ও ৫টি বাজার তালিয়ে গেছে। বিলাইছড়ি উপজেলার ১টি ইউনিয়ন ও বিলাইছড়ি উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে আকস্মিক বন্যায় সৃষ্টি হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর পানি বাড়ায় চন্দ্রঘোনা ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, ঝুকিপূর্নরা বসবাসকারীদের জন্য জেলার ২৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১ হাজার ১২৭ জন নারী,শিশু ও পুরুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। রাঙামাটি শহরে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে ৫টিতে প্রায় ৫শতের অধিক লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন। পাহাড় ধসের আশংকা থাকায় ঝুকিপুর্ণদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
জানা গেছে, পাহাড় ধসে শহরের পৃথক দুটি স্থান ভেদভেদীস্থ পশ্চিম মুসলিম পাড়া ও পাবিলক হেলথ এলাকায় দুটি একটি বসত বাড়ীতে পাহাড় ধসে পড়েছে। তবে লোকজন না থাকায় কেউই হতাহত হননি। অন্যদিকে সোমবার রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের দেপ্পোছড়ি ও সাপছড়ি এলাকায় এবং কাপ্তাইয়ের বড়ইছড়ি-ঘাগড়া সড়কের বিভিন্ন সড়কের টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধস হয়েছে। এসব স্থানে পাহাড় ধস হলেও কেউই হতাহত হয়নি। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ তাৎক্ষনিকভাবে ধসে পড়া মাটি অপসারণ করে যানবাহন চলাচল স্বাভাকি রেখেছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, ভারী বর্ষনে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম, ঘাগড়া-বড়ইছড়ি ও কাপ্তাই-রাজস্থলী সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের মাটি ধসে পড়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের মোবাইল টিম তাৎক্ষনিকভাবে সড়ক মাটি অপসারণ করছে। যানবাহন চলাচলের স্বাভাবিক রয়েছে। এ পর্ষন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগ অধীনে বিভিন্ন সড়কে ১৮টি স্পটে পাহাড় ধস হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে রাঙামাটি জেলায় ১৯৭টি স্পটে বসত ঘর, সড়ক ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া বিলাইছড়ি উপজেলার ১টি ইউনিয়ন ও জুরাছড়িতে ৪টি ইউনিয়নে নিম্নাল প্লাবিত হয়ে আকস্মিক বন্যা দিয়েছে। তিনি অরো জানান, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপুর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.