পার্বত্য চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাঘাইছড়িতে গণ সমাবেশ

Published: 02 Dec 2022   Friday   
no

no

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাঘাইছড়িতে গণ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে  গণ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক নজরুল কবীর।  পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ২৫ বছর উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মিসেস সুমিতা চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী সুমি খান। বক্তব্য রাখেন কাচালং সরকারি কলেজের  অধ্যক্ষ দেবপ্রসাদ দেওয়ান,বাঘাইছড়ি  উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাগরিকা চাকমা । এছাড়াও সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাঘাইছড়ি উপজেলার জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান ও বিভিন্ন কলেজ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।


অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন স্থানীয় বাঘাইছড়ি উপজেলার ৩২ নং বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, অলিভ চাকমা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বর্ষপূর্তি উৎযাপন করা হয়েছে।  বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিল্টু চাকমা। 

স্বাগত বক্তব্যে অলিভ চাকমা বলেন, `সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বহু ধারা, বহু বিষয় বাস্তবায়ন করলেও এখনো পর্যন্ত চুক্তির যে মৌলিক রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করেনি। ফলে সরকার জুম্ম জনগণকে সেই চুক্তির ২৫ বছর আগের সময়কালে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করছে।`

স্থানীয় হেডম্যানের পক্ষে বাঘাইছড়ি উপজেলা এসোসিয়েশনের বর্তমান হেডম্যান ও রূপকারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চাকমা বলেন, নিপীড়িত-নির্যাতিত জুম্ম জনগণের মহান আত্মবলিদান ও অবর্ণনীয় ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে জুম্ম জনগণ তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি-বাঙালি স্থায়ী অধিবাসীদের অধিকার সনদ এই পার্বত্য চুক্তি অর্জিত হয়েছে। কিন্তু  ২৫ বছরেও এই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় জুম্মদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়ে বলেন, চুক্তি দ্রুত ও যথাযথ বাস্তবায়ন না হলে পাহাড়ে আগুন জ্বলবে।

প্রত্যাগত জনসংহতি সমিতির পক্ষে জ্যোতিস্মন চাকমা বলেন, `সুদীর্ঘ ২৫ বছর আগে ঐতিহাসিক এইদিনে সরকারের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ দুই যুগের অধিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটে৷ এবং এরই মধ্যে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সাময়িক শান্তি ফিরে আসে। চুক্তির মধ্যে দিয়ে আমাদের আশা ছিল    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নিরাপত্তা বিধান করবেন৷ আমাদের প্রত্যাগত জনসংহতি সমিতির সদস্যদের যথাযথ পুনর্বাসন করবেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় চুক্তি স্বাক্ষরের বছর দুয়েক যেতে না যেতেই প্রত্যাগত জনসংহতি সমিতির সদস্যদের উপর নেমে আছে চরম হতাশা, নিরাশা, নিরপত্তাহীনতা ও বেকারত্ব। এছাড়াও আরও আমাদের উপর নেমে আসে নানা প্রকারের হামলা, মিথ্যা মামলা, হয়রানি ও নানান দমন-পীড়ন। আজ আমরা দিশেহারা ও অসহায়ত্ব নিয়ে দিনাতিপাত করছি। 


বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুমি খান বলেন, পাহাড়ে এখনো সেই ব্রিটিশদের `ভাগ কর, শাসন কর` ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা চলমান রয়েছে। উন্নয়নের নামে আদিবাসীদের ধ্বংস করা হচ্ছে, তাদেরকে ভিটেমাটি হারা করা হচ্ছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল কবীর বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না করার জন্য সরকারের কাছের একটি বিশেষ মহল ও সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্রের একটি বিশেষ অংশ আগেও সক্রিয়ভাবে কাজ করে গেছে এবং এখনো যাচ্ছে। পরে বক্তব্যের শেষে তিনি অধিকার আদায়ের জন্য
জুম্ম জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত