রাঙামাটির মগবানের কাপ্তাই হ্রদের পানির মাঝখানে স্থাপিত মহাপরিনির্বানপ্রাপ্ত আর্য্যপুরুষ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের জন্ম স্মৃতি স্তম্ভ উদ্বোধন করা হয়েছে। মগবান ইউনিয়নের মোড়ঘোনা গ্রামে মঙ্গলবার প্রদীপ জ্বালিয়ে উদ্বোধন করেন বনভন্তের প্রধান শীর্ষ্য ও রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষু সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। এসময় হাজার হাজার বৌদ্ধ নর নারী সাধু সাধু বলে ধ্বনী উচ্চারণ করেন।উল্লেখ্য, বিদ্যূৎ উৎপাদনের লক্ষে ১৯৬০ সালে কর্ণফুলী নদীতে বাধের দেয়ায় কাপ্তাই বাধ সৃষ্টি হয়। এতে পরমপুজ্য বনভান্তের জন্মস্থান রাঙামাটি উপজেলা সদরের মগবান ইউনিয়নের মোড়ঘোনা গ্রামসহ ২৫৬ বর্সগমাইল এলাকা জুড়ে জলমগ্ন হয়। এতে এক লাখের অধিক লোকজন উদ্ধাস্তু হয় এবং ৫৪ একর ধান্য জমি পানিতে ডুবে যায়। মহাপরিনির্বানপ্রাপ্ত অরহৎ শ্রাবক বনভান্তে ১৯২০ সালে ৮ জানুয়ারী মোড়ঘোনা গ্রামে সাধারন পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারী ৯৩ বছর বয়সে বনভান্তে দেহ ত্যাগ(মহাপ্রয়ান) করেন। তাঁর ভক্ত ও পুর্নার্থীদের শ্রদ্ধা ও দর্শনের জন্য বর্তমানে রাজ বন বিহারে বনভান্তের মরদেহটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিশেষ কফিনের রাখা রয়েছে।বনভান্তের জন্ম স্মৃতি স্তম্ভ উদ্বোধনের পর পর পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধমুর্ত্তি দান, উৎসর্গসহ বিভিন্কন দান কার্য সম্পাদন করা হয়। এর পর ধর্মীয় আলোচনা সভায় ধর্ম দেশনা দেন শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির, শ্রীমৎ জ্ঞান প্রিয় মহাস্থবির, ভৃগু মহাস্থবির। বক্তব্য দেন, তিন পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ফিরোজা বেগম চিনু, চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা, রাঙামাটি রাজ বন বিহার পরিচালনা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি গৌতম দেওয়ান।এছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি দীপেন দেওয়ান,বালুখালী ইউপি চেয়ারম্যান বিজয়গিরি চাকমা, মগবান ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চাকমা, রাজ বনবিহার পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক প্রতুল বিকাশ চাকমাসহ আদিবাসী নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে হাজার হাজার বৌদ্ধ নর নারী দেশীয় নৌকা ও লঞ্চ নিয়ে এ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠান শেষে বনভান্তের রেকর্ডকৃত দেশনা বাজানো হয়।রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির বলেন, যে যত বেশী ভালো কাজ করবে সে তত বেশী বুদ্ধের সান্নিধ্য লাভ করবে। গৌতম বুদ্ধে অহিংসার বানী আমাদের মনের মধ্যে ধারণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে।তিনি আরও বলেন, শ্রদ্ধেয় বনভন্তের জন্ম স্থানে জন্ম স্মৃতি স্তম্ভ তৈরী করতে পেরে নিজেদের কিছু হালকা মনে হচ্ছে। বনভান্তের এ স্মৃতিকে ধরে রাখতে সকলকে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে এ এলাকার মানুষকে বনভন্তের স্মৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.