“বিল্ডিং এ শেয়ারড ফিউচার ফর অল লাইফ ” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে খাগড়াছড়ি মহালছড়িতে আন্তর্জাতিক জীব বৈচিত্র্য দিবস পালিত হয়েছে। স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা উদ্যোগে রোববার সকালে (২২ মে) উপজেলার মুবাছড়ি ইউনিয়নে মনাটেক রিসোর্স সেন্টারে এ দিবসটি পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় চামেলী ত্রিপুরার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন মহালছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কান্তি চাকমা। এছাড়া বক্তব্য রাখেন কর্মসূচী ব্যবস্থাপক সুইচিং অং মারমা, ইউএনডিপি এসআইডি- সিএইচটি প্রকল্পের ডিষ্ট্রিক লাইভলিহুড এন্ড কমিউনিটি মোবিলাইজার উসিংমং চৌধুরী।
আলোচনা সভায় কিনোট প্রেজেন্টার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাংগামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেসট্রি এন্ড এনভাইরনমেন্ট ডিপার্টম্যান্ট এর সহযোগী অধ্যাপক ডঃ সুপ্রিয় চাকমা।
সভায় তিনি উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে জীববৈচিত্র্য নিয়ে একটি মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করে দেখান। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করা অতীব জুরুরি। তা যদি করতে না পারি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বেঁচে থাকা কঠিন হবে। তিনি সবার সামনে এমন কিছু রেয়ার বন্য প্রাণীর ছবি উপস্থাপন করেন যা উপস্থিত বর্তমান প্রজন্মরা নামও জানেন না। সুতরাং, সেখান থেকে ধারণা করা যায় আমরা আমাদের ঐতিহ্য ও পরিবেশ রক্ষা করতে পারছিনা। আমাদের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরী। এক সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম গভীর বন ছিল এবং প্রচুর বন্যপ্রানীও ছিল । পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে গেছে । তাই বন ও প্রাণী গুলোকে রক্ষা করা আমাদের উচিত।
আলোচনা সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন আগেকার দিনে যারা জুম চাষের জন্য জংগল কাটেন তারা ছড়ার পাড়ে জংগল গুলো অক্ষত রেখেই জুম চাষ করতেন । ফলে ছড়া বা ঝিরি গুলো রক্ষিত থাকতো। কিন্তু বর্তমানে যারা জুম চাষ করে তারা আর আগের নিয়ম মেনে চলেনা । অন্যদিকে যারা বাগান চাষ করে তারা জংগল পরিস্কার করার ক্ষেত্রে কোন নিয়ম কানুন মেনে চলে না। এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য জীববৈচিত্র্যের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সবার জানা জুরুরি । পাড়াবন সংরক্ষণ করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন। কেননা আমাদের বেঁচে থাকা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার সাথে এটি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। প্রকৃতিকে আঘাত করলে প্রকৃতি আমাদেরকে প্রতিঘাত করবে ।
যে কোন দেশের মোট ভুখন্ডের ২৫ শতাংশ বনভুমি থাকতে হয় কিন্তু বাংলাদেশে তা নেই । পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ১২.০৮ শতাংশ । তাই আমাদের বন স্মৃষ্টি করতে হবে। আমাদের সংস্কৃতি আমাদেরকেই সংরক্ষণ করতে হবে । আমাদের এলাকায় কিছু কিছু ডিপওয়েল বসানো হয়েছে এবং ঐ ডিপওয়েল থেকে প্রতিনিয়ত পানি আপচয় হচ্ছে । যার ফলাফল আগামীতে নিসন্দেহে ভালো হবে না । তাই তা না করে প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে তা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহ করে। প্রাকৃতিক সম্পদ হারানোর জন্য মূলত আমরাই দায়ী। তাই আমাদের জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আলোচনা সভায় প্রকল্পের সুবিধা ভোগী ও এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে খাগড়াছড়ি জেলায় ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনডিপির কারিগরি সহায়তায় চিটাগং হিল ট্রাক্টস ওয়াটারশেড কো-ম্যানেজমেন্ট এ্যাক্টিভিটি কমিউনিকেশন কনজারভেশন এসআইডি- সিএইচটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে খাগড়াছড়ির স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠন তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা।
---হিলবিডি২৪/সম্পদনা/এ,ই