রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কাপ্তাই ইউপি মেম্বার সজিবুর রহমান(৪৫) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো ৩ জন আহত হয়েছেন। হত্যাকান্ডের সন্দেহ এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে কাপ্তাই উপজেলা সদরের নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার মধ্যরাতে কাপ্তাই উপজেলার জেটিঘাটের নতুন বাজার এলাকায় আওয়ামীলীগের সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ ও আওয়ামীলীগের সমর্থন বঞ্চিত প্রার্থী মহি উদ্দীন পাটোায়ারী বাদলের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে সংঘর্ষে কাপ্তাই ইউপির বর্তমান মেম্বার সজিবুর রহমান, মো. আলা উদ্দীন(৪৫) ও মো. সালাহ উদ্দীন ও আব্দুল জলিল আহত হন। তাদের আহত অবস্থায় কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর ইউপি মেম্বার সজিবুর রহমানকে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মুত ঘোষনা করেন। এছাড়া আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশংঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য দুজন কাপ্তাই উপজেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিহত সজিবুর রহমান টানা দুবারের ইউপি মেম্বার নির্বাচিত হন। বুধবার বিকালে নিহত সজিবের জানাজা শেষে স্থানীয় কবর স্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইন-শৃংখলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেই কাপ্তাই সুইডিশ কলোনি এলাকায় অভিষান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মোঃ আরফিুল ইসলাম বাবু (২৫) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তিনি ইউপি নির্বাচনে অংশ নেওয়া মহিউদ্দীন পাটোয়ারী বাদলরে সর্মথক। বুধবার সকালের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও জেলা পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন। আগামী ১১ নভেম্বর কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই, রাইখালি ও ওয়াগ্গা ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে, কাপ্তাই ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল লতিফ দাবী করে জানিয়েছেন, নিহত সজিবের সাথে কারো বাকবিতন্ডা হয়নি। তিনি মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে আওয়ামীলীগ নেতা আক্তারের সাথে আলাপ করছিলেন। ওই মুহূর্তে প্রতিপরে সমর্থকরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সজিবের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিউদ্দিন পাটোয়ারী বাদল বলেন, সজিবসহ ২০ জনের একটি গ্রæপ রাতে মা বেকারিতে গিয়ে তার সমর্থিত কর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। পরে একসময় তাদের দু`পরে কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। মূলত সজিবরা গায়ে পড়েই তাদের সঙ্গে ঝগড়া করেছে।
প্রসঙ্গতঃ গেল ১৬ অক্টোবর রাতে আওয়ামীলীগের সমর্থিত প্রার্থী ও কাপ্তাইয়ের চিৎমরম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নেথোয়াই মারমা দুর্বৃত্তরদের গুলিতে নিহত হন।
কাপ্তাই থানার ওসি নাছরি উদ্দিন জানান, বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিউদ্দিন পাটোয়ারী বাদল ও আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ (বর্তমান চেয়ারম্যান) সমর্থকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে সজিবসহ আরো ৩ জন গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইউপি সদস্য সজিবকে মৃত ঘোষণা করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.