বান্দরবানের চিম্বুকের নাইতং পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠীদের পিতৃ পুরুষের আবাস ভূমি ও জীবিকা উচ্ছেদ করে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন অবিলম্বে প্রকাশ, প্রতিবাদকারীদের হয়রানি বন্ধ, ম্যারিয়ট হোটেল ও রিসোর্ট প্রকল্পটি বাতিলের দাবী জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি।
বৃহস্পতিবার পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবী জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠীদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের অভিযোগের দাবীর প্রেক্ষিতে রাঙামাটির সাংসদ দীপংকর তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির একটি তদন্ত কমিটি গত ২০ ও ২১ মার্চ সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন ও ম্রো জনপ্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন।
চিম্বুক পাহাড়ের ম্রো আদিবাসীদের দাবির সাথে একাত্নতা প্রকাশ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন কেন্দ্রটি নির্মিত হলে ম্রোদের চাষের পাহাড়ি জমির একটা বিশাল অংশসহ তাদের ফলজ বাগান, পবিত্র জায়গা, শশ্মানঘাট নিশ্চিতভাবে বেদখল, পানির উৎসগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সংরক্ষিত পাড়াবন ও জীব বৈচিত্র্য ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া শত শত ম্রো পরিবার তাদের বংশানুক্রমিক আবাসভূমি থেকে উচ্ছেদের পাশাপাশি তাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের প্রতি হুমকি হয়ে দাড়াঁবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ম্রো জনগোষ্ঠীদের এই আন্দোলনের প্রতি শুধু দেশের বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ, ছাত্র ও রাজনৈতিক সংগঠন, সাংসদ, বুদ্ধিজীবি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সংহতি জানায়নি। জাতিসংঘের আদিবাসী অধিকার বিষয়ক স্পেসিয়াল রিপোটিয়ারসহ বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক মানবধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে চিম্বুক পাহাড়ে পর্যটন রিসোর্টস স্থাপন করে ম্রো জনগোষ্ঠীকে তাদের বংশ পরম্পরার আবাসভূমি থেকে উচ্ছেদ এবং পরিবেশের ক্ষতি সাধন না করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহŸান করেছে। এছাড়াও চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস্ কমিশন, এ্যামেনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনা ওয়ার্কিং গ্রæপ ফর ইন্ডিজেনাস এ্যাফেয়ার্স, এশিয়া ইন্ডিজেনাস পিপল্স ফ্যাক্ট ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও মানবাধিকার সংস্থা উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও পার্বত্যমন্ত্রীর কাছেও চিঠি পাঠিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিকদার গ্রুপের মতো একটি বিতর্কিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে একটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জনস্বার্থ বিরোধী এই প্রকল্প বাতিল ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ১৯৯৭ ও প্রযোজ্য আইনের অধীনে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিসহ চুক্তির সার্বিক বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে।
--প্রেস বিজ্ঞপ্তি।