‘বৈ-সা-বী’র আগাম বার্তা নিয়ে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও পাহাড় জুড়ে ফুটেছে ‘বিজু ফুল’। এ ফুল দেখলেই আদীবাসীদের মনে ‘বৈ-সা-বী’র আনন্দে মন দোলা দেয় আর প্রস্তুতি নিতে থাকে ‘বৈ-সা-বী’র।
প্রকৃতিতে আপনা-আপনি ফুটে এ ফুলগুলো। আদিবাসীরা বংশ পরস্পরায় ফুল বিজু দিনেই এ ‘বিজু ফুল’ দিয়ে পুরো ঘর সাজায়। ‘ফুল বিজু’ দিনে এ ফুল দিয়ে ঘর সাজানো হলেই ‘বিজু-এর পরিপূর্ণতা পায়। তবে পাহাড়ে এখন আর আগের মতো ‘বিজু ফুল’ না পাওয়া অন্যান্য ফুল দিয়েও ঘর সাজায় আদিবাসীরা।
চাকমারা এ ফুলকে বলে ‘ভাতজোড়া ফুল’। ত্রিপুরারা বলে ‘কুমুই বোবা’। মার্মারা বলে ‘চগাপেইং’ আর সাওতাল সম্প্রদায়রা এ ফুলকে বলে ‘পাতাবাহা’, পাহাড়ের বাঙ্গালীরা বলে ‘ভিউফুল’। ‘ফুল বিজু’ দিনে ‘বিজু ফুল’ সংগ্রহের জন্য অনেকেই ভোরে জঙ্গল থেকে ‘বিজু ফুল’ তুলে আনে। আদিবাসীরা আগের সেই রেওয়াজ হারিয়ে যেতে বসেছে বলে বয়োবৃদ্ধরা জানান।
পানছড়ি উপজেলার মির্জাবিল গ্রামের কার্বারী মধু মঙ্গল চাকমা বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম ফুল বিজু দিনে ‘বিজু ফুল’ সংগ্রহের জন্য খুব ভোরে জঙ্গলে যেতাম। আর বিজু ফুল দিয়ে পুরো ঘর সাজিয়ে নিতাম। এখনতো আর সেই দিন নেই। মানুষ এখন বিজু নিয়ে আনন্দÑফুর্তি কম করে। কালের আবর্তনে পরবর্তী প্রজন্মের আদিবাসী শিশুরা বিজু ফুল চিনবে না। একটাই কারণ পাহাড়ে আগের মতো আর বনজঙ্গল নেই।
লোগাং বাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিমলেন্দু চাকমা বলেন, পাহাড়ে বৃক্ষশুন্য হওয়ার কারনে এখন আর আগের মতো ‘বিজু ফুল’ পাওয়া যায় না। অব্যাহত বন উজার আর পাহাড় কাটার ফলে ভবিয্যতে এ ফুল পাওয়া কষ্ট সাধ্য হবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এ ফুলগুলো চিনাবেও না। ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য এ ফুল সংরক্ষন করা প্রয়োজন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.