রাঙামাটিতে তিন দিন ব্যাপী পার্বত্য সাংস্কৃতিক উৎসব ও মেলার উদ্ধোধন

Published: 04 Apr 2015   Saturday   

শনিবার থেকে তিন দিন ব্যাপী রাঙামাটিতে পার্বত্য সাংস্কৃতিক উৎসব ও মেলা শুরু হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু-কে কেন্দ্র করে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।


উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ২৯৯নং রাঙামাটি আসনের নির্বাচিত সাংসদ উষাতন তালুকদার বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি স্থিতিশীলতা বজায় থাকতো তাহলে বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু-এ উৎসবটি আরও আনন্দঘন হতে পারতো। অস্থিতিশীলতার পরিবেশের মধ্য থেকেও এ উৎসবটি আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপনের জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এ উৎসবটি শুধু আনন্দের নয়, সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায় তথা এ অঞ্চলের বসবাসরত জনগোষ্ঠীর সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক, ঐক্য ও মৈত্রী বন্ধনের প্রতীকও বটে।


রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিউিটের উদ্যোগে আয়োজিত ইনস্টিউিট প্রাঙ্গনে উৎসব ও মেলার উদ্ধোধক ও প্রধান অতিথি ছিলেন ২৯৯নং রাঙামাটি আসনের নির্বাচিত সাংসদ উষাতন তালুকদার। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো: সামসুল আরেফীন। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিউিটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রনেল চাকমা।

 

এর আগে প্রধান অতিথি ফিতা কেটে মেলার উদ্ধোধন করেন। এসময় শিশু শিল্পীরা উদ্ধোধনী নৃত্য পরিবেশ করেন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা শিশুদের আয়োজিত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। সন্ধ্যায় আয়োজিত হয় আদিবাসী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 

উষাতন তালুকদার এমপি বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু-এর আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে আরও বলেন, জীবনে আনন্দ অনুভূতি উপভোগ করতে বাংলা বছরের শেষ ও শুরুতে যুগযুগ ধরে পাহাড়ের আদিবাসীরা এ প্রাণের উৎসবটি পালন করে আসছে। উৎসবে সামিল হন এখানকার সব জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ। এ উৎসব কেবল আনন্দের নয়- এটি সারা বছরের দুঃখ, গ্লানি মুছে নতুন বছরে সুখ, শান্তি, আনন্দ ও সফলতার স্বপ্ন রচনা করে পাহাড়ের মানুষ। তিনি সকল জাতি, গোষ্ঠী মানুষকে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে  এ উৎসবে সামিল হওয়ার আহবান জানান তিনি।

 

সভাপতির বক্তব্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা পার্বত্য আদিবাসীদের সংস্কৃতি বিকাশ ও সংরক্ষণে উৎসবকে আনন্দ ও শান্তিপূর্ণ করে সফল ও স্বার্থক করতে একে অপরে আন্তরিকপূর্ণ সহানুভূতি উৎসবে সামিল হওয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, পাহাড়ি জনগণের এ উৎসব ঘিরে যাতে পাহাড়ে সব জাতি, গোষ্ঠী, ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধন চির অটুট হয়ে ওঠে। আগামীতে  রাঙামাটিতে পার্বত্য সাংস্কৃতিক উৎসব ও মেলা বৃহত্তর পরিসরে আয়োজনের আশ্বাস দেন।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো: সামসুল আরেফীন বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাণের এ উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু। এ সব উৎসব শুধু পাহাড়িদের নয়, আমাদের সবার জন্য আনন্দ উপভোগের উৎসব। এ উৎসবের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে সারা দেশের মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সামাজিক যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় হয়ে উঠবে। অটুট হয়ে উঠবে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি।

 

উৎসব যাতে নির্বিঘ্নে ও আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হতে পারে সে জন্য প্রশাসন সর্বাত্মক ও সার্বিক সব ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। এজন্য প্রশাসন থেকে যে কোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ারও তিনি নিশ্চয়তা দেন।  



উল্লেখ্য, আগামী ১২ এপ্রিল থেকে তিন দিন ব্যাপী পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু শুরু হচ্ছে। এ উৎসবকে ঘিরে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বসবাসরত আদিবাসী জনপদগুলেতে এখন চলছে উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। সাধারনত বাংলা বর্ষের শেষ দুদিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এ উৎসব পালিত হয়ে থাকে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত