সুপেয় পানি সংকটে দুমদুম্যা ইউনিয়নের ১২ হাজার পরিবার

Published: 01 Jun 2020   Monday   

পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যতম দূর্গম এলাকা রাঙামাটি জুরাছড়ি উপজেলার দুমদুম্যা ইউনিয়ন। এটি জুরাছড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে দূর্গম পাহাড়ি এলাকা। উপজেলার এই ইউনিয়নে সব চেয়ে বেশি জনসংখ্যার বসবাস এবং এ উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন।বেশি দুর্গমতার কারণে এই করোনা সময়ে সেখানে  সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরন করেন জেলা প্রশাসন ।

 

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, এ ইউনিয়ন বাসীদের  একমাত্র উপায় হলো কুয়া থেকে বা ছোট ছোট ঝর্না থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে সেখানে নিরাপদ পানির অভাব।একটু বৃষ্টি হলেই কুয়ার পানিগুলো অপরিস্কার এবং ঘোলাতে হয় এবং পানিগুলো নিরাপদ নয়। যার কারনে সেখানে শিশুরা বিভিন্ন সময়ে ডাইরিয়া, থাইপয়েড,জন্ডিস সহ নানা প্রকার পানিবাহিত দুরারোগ্য প্রাদূর্ভাব দেখা দেয়। অনেক সময় অনিরাপদ পানি সেখানে মানুষের মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়ায়। এলাকাটি দূর্গম হওয়ায় সেখানে গভীর নলকূপ কম থাকায় পানি সংগ্রহে দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে। এখনো পর্যন্ত ঐসব গ্রামগুলোতে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়নি। কোন গ্রামেই এমন গভীর নলকূপ দেখা মেলেনি। সেখানকার মানুষের একমাত্র কষ্টের মূল উৎস ঝর্না থেকে বা কুয়া থেকে পানি সংগ্রহ করা। সেখানে এক একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২০০-২৫০ ফুট পর্যন্ত গভীরে যেতে হবে। যার এক  একটি খরচ পরবে ২-৩ লক্ষ টাকা। কারন সেখানে খরচ বেশি লাগে এই কারণে রাঙামাটি সদর থেকে বোট যোগে প্রায় দুই থেকে তিন দিন লাগে। যা বরকল উপজেলার ঠেগামুখ হয়ে যেতে হয় ভারত এবং বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী নদী পথে।

 

ইউনিয়নের লাতূয়াম পাড়ার মানিক্কে চাকমা, বলেন আমাদের সুপেয় পানি বা ঘরের ব্যবহারের জন্য ছড়া বা কুয়ার উপর নির্ভর থাকতে হয় । তাই  এই বর্ষায় সময় বেশি আমাদের পানির কষ্ট হয় । তাই শুধু বৃষ্টির সময় হাড়ি পাতিল দিয়ে যা পানি ধরে রাখতে পারি তাই দিয়ে কোনমতে গৃহস্থালির কাজ সেরে ফেলতে হয়।

 

ঘিলালুদি এলাকার বিমল চাকমা বলেন, শুধু বর্ষায় নয়, শুকনো মৌসুমেও ছড়া, ঝিড়ি সব শুকিয়ে যাওয়ার ফলে আমাদের পানির জন্য  কষ্ট হয় ।

 

সুরেশ কুমার চাকমা, জুড়াছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, উপজেলার অন্যন্য ইউনিয়নের চেয়ে এ ইউনিয়নটি অনেকে পিছিয়ে রয়েছে। তাছাড়া দুর্গমতার কারণে সেখানে আসলে তেমন উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছেনা।

 

জুরাছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান, বলেন উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের চেয়ে এ দুমদুম্মে ইউনিয়ন অনেক বড়। তাছাড়া এটি ভারত সীমান্তভর্তি হওয়ায় সেখানে যেতে অনেক কষ্টসাধ্য। সেজন্য সেখানে সব জায়গায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা যায়নি। তারপরেও আমরা এডিবির অর্থায়নে উপজেলা পরিষদ থেকে সেখানে কিছু নলকূপ স্থাপনের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আশাকরি শীঘ্রই হবে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত