হঠাৎ করে বিলাইছড়িতে আবারও পর পর আট জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। তবে আক্রান্তরা সবাই পুলিশ সদস্য বলে জানা গেছে।
বিলাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রশ্নি চাকমা জানান, ৫ জুলাই রিপোর্টে বিলাইছড়িতে ৪ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। তবে এর আগেও পর পর ৪ জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। অর্থাৎ এই নিয়ে বিলাইছড়িতে নতুন করে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা আট জন। আক্রান্তরা সবাই পুলিশ সদস্য।
তিনি আরো জানান, গেল ৪ জুলাই সকালে জ্বর ও শ্বাস কষ্ট নিয়ে একজন পুলিশ সদস্যকে বিলাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। পরে তাকে ঐদিন রাতে আমরা তাকে রাঙামাটিতে আইসোলেশন সেন্টারে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানে অবস্থান করছে।
তিনি জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পুলিশ সদস্যর নমুনা দিলেও তার তখনো রিপোর্ট আসে নাই। পরে ৫ জুলাই এর রিপোর্টে তার করোনা পজিটিভ আসে। তাদের শরীরে করোনার প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর এবং কাশি থাকার কারণে তাদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। পরে রিপোর্টে পজিটিভ আছে। তারা বর্তমানে পুলিশের হেফাজটে রয়েছে এবং আক্রান্তরা সবাই সুস্থ আছেন বলে তিনি আমাদেরকে জানান।
বিলাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ পারভেজ আলী তার থানার আট জন পুলিশ সদস্যর করোনা পজিটিভ আসার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আট জনের মধ্যে ৫ জন কনস্টবেল এবং ৩ জন অফিসার রয়েছে। ৪ জুলাই এদের মধ্যে একজনের কিছুটা শ্বাস কষ্টের সমস্যা দেখা দিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানোর পর যেহেতু এখানে চিকিৎসার তেমন ব্যবস্থা না থাকায় পরে রাঙামাটি আইসোলেশন সেন্টারে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। তবে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি, এবং বর্তমানে সে সেখানে সুস্থ আছে। এবং বাকী সাত জনের মধ্যে ৩ জনকে বিলাইছড়ি মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং ৪ জনকে থানায় যার যার রুমে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তারাও বর্তমানে সবাই সুস্থ আছেন বলে জানান।
তিনি আরো জানান, আমার ধারণা গেল ১৭ জুন বিলাইছড়ি বাজারে আগুণ লাগলে আমার পুরো ফোর্স আগুণ নেভানোর জন্য সাধারণ জনগণসহ একসাথে কাজ করার পর থেকে আমার পুলিশ সদস্যদের জ্¦রসহ কাশির উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। আমার ধারণা সেখান থেকে হয়তো তারা যে কারোর থেকে সংক্রমিত হতে পারে। কারণ আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা সবাই উপজেলায় পুরাতন সদস্য এবং এর মধ্যে তারা কোথাও যায় নাই।
তিনি জানান, আমরা যেভাবে একটু জ্বর হলে নমুনা দিচ্ছি, সেভাবে সাধারণ জনগণ সামান্য জ্বর হলে নমুনা দিচ্ছে না তাই হয়তো সাধারণ জনগণের মাঝে করোনা সনাক্ত হচ্ছে না। তবে আমি আমার পুলিশ সদস্যদের একটুখানি জ্বর হলেই নমুনা দিতে বলছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী জানান, আক্রান্তরা সবাই পুলিশ সদস্য। তারা নমুনা দিচ্ছে তাই হয়তো তাদের বেশি পজিটিভ আসতেছে, জনগণতো ওভাবে নমুনা দিচ্ছেনা। আমি খবর নিয়েছি আক্রান্তরা এর ভিতরে কোথাও যায় নাই। তাই উপজেলার যে কারোর কাছ থেকে তারা সংক্রমিত হতে পারে। কারণ বিলাইছড়ির মানুষতো ঘরে বসে নেই। সবাই নিজ প্রয়োজনে রাঙামাটি, কাপ্তাই এবং চট্টগ্রামে গেলেও তারা কাপ্তাই গিয়েছি এভাবে বলছে। তাই সবাইকেতো পুরোপুরি নিয়ণত্রণে রাখা যাচ্ছে না। এভাবে করে সংক্রমন ছড়ানো অসম্ভবনা।
তিনি আরো জানান,আক্রান্তদের সবাইকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আমি ওসি সাথে কথা বলেছি, যেহেতু ডিউটি তো বন্ধ রাখা যাবে না। তাই দায়িত্বরত অবস্থায় যতটুকু পারা যায় জনগণ থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা। যাতে করে ক্উে কারও থেকে নতুন করে সংক্রমিত না হয়। তিনি বলেন, যেহেতু বিলাইছড়ি দূর্গম এলাকা, এবং এখানকার লোকজন শহরের লোকজনের মত সচ্ছল না। এজন্য এলাকার লোকজনকে আমরা চাল, ডাল দিয়ে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। তাই শহরের মত এখানে জেল জরিমানা করে সচেতন করা সম্ভবনা। এখানে কমিউনিটির লোকজনসহ সবাই মিলে একসাথে জনগণকে বুঝাতে হবে যাতে তাদের মাধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায়।
প্রসঙ্গত,গেল ১৩ মে বিলাইছড়ি উপজেলায় প্রথমবার একই পরিবারের দৃইজনের দেহে করোনা সনাক্ত হয়। পরবর্তীতে তারা সুস্থ হয়। এবং ৫ জুলাই পর্যন্ত রিপোর্ট অনুুযায়ী নতুন করে আরও ৮ জন করোনায় সংক্রমিত হয়। অর্থাৎ এই নিয়ে বিলাইছড়িতেু মোট আ্ক্রান্তের সংখ্যা ১০ জন। এবং তার মধ্যে দুইজন সুস্থ হয়েছেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.