মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে বান্দরবানের রাজবিলা ইউনিয়নের বাগ মারা বাজার পাড়া এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে এমএন লারমা গ্রুপের পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতির (সংস্কার পন্থী) ৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে এক মহিলাসহ ৩ জন। আহতদের বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সংস্কারের জেলা কমিটির সদস্য উয়াইমং মার্মা বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে রান্না করছিলাম। এর প্রায় আধা ঘন্টা পরেও পরে জলপাই রঙের পোশাক ও নিচে ত্রিকোয়াটার প্যান্ট পরিহিত দুই জন অস্ত্রধারী প্রথমে সংস্কারের জেলা সভাপতি রতন তঞ্চঙ্গ্যাকে বুকে গুলি করে। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা বিমল কান্তি চাকমাকেও বুকে গুলি করে হত্যা করে। ঘটনার সময় তারা দুজনে বাইরে চেয়াওে বসে গল্প করছিলেন। তাদের হত্যার করার ঘটনা দেখে পাশের জমিনে লাফ দিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যান। লাফ দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তার পাশে থাকা দিপেন চাকমাও গুলিতে নিহত হয়েছে।
নিহত সংস্কারের জেলা সভাপতি রতন তঞ্চঙ্গ্যার স্ত্রী মিনি মার্মা বলেন, সকালে বাগমারা বাজার থেকে তার স্বামী(রতন) রান্নার জন্য তরকারী বাজার করে নিয়ে আসে। বাজারগুলো বাইরের রান্না ঘরে রেখে উঠানে প্লাস্টিকের চেয়ার নিয়ে তারা দুই জনে বসে গল্প করছিলেন। এর কিছুক্ষন পরে গুলি শব্দ শুনি। বাইরে বের হয়ে দেখি তার স্বামী চেয়ারে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পাশে অন্য জন মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। অস্ত্রধারীরা তাকে গুলি না কওে তাঁর চোখের সামনে অন্যজনদের গুলি কওে হত্যা করেছে।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটের দিকে বাগমারা বাজার পাড়ার সংস্কারের সভাপতি রতন তঞ্চঙ্গ্যার বাসায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। দুর্বৃত্তরা খুব কাছ থেকে গুলি কওে সংস্কারের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। এ ঘটনায় নিহতরা হলেন পার্বত্য চট্টগ্রামজনসংহতিসমিতিসংস্কার এর কেন্দ্রীয়কমিটিরসহ-সভাপতিবিমলকান্তিচাকমাওরপেপ্রজিত (৬৫), কেন্দ্রীয়ক মিটির নেতা ডেবিট মার্মা (৫০),সংস্কার দলের জেলা সভাপতি রতন তঞ্চঙ্গ্যা (৬০),জয় ত্রিপুরা (৪০), ডিপেন ত্রিপুরা (৪২), মিলন চাকমা (৬০), আহতরা হলেন নিরু চাকমা (৫০), বিদ্যুত ত্রিপুরা (৩৭) ও এক মার্মা মহিলা। ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে জেলা সদও হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত তিন জনকে জেলা সদও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় সংস্কারের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক উবামং মার্মা বলেন, রতনের বাড়ির পাশের বাড়িটি আমার। বউ-বাচ্চ ানিয়ে আমি তখনো বিছানায়। গুলির শব্দ শুনে বিছানায় পড়েছিলাম। আমার বাড়ির ভেতওে প্রবেশ করে অস্ত্রধারীরা মিলন চাকমাকে গুলি কওে হত্যা করে। রুমে দরজা বন্ধ থাকায় আমিও কোন মতে বেঁচে যায়। এ এ হত্যাকান্ডের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএসের অস্ত্রধারীরা জড়িত। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে জেএসএসের জেলা কমিটির সভাপতি উছোমং মার্মার মোবাইল ফোনে কয়েক বার ফোন কওে তাকে পাওয়া যায়নি।
সদর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, সংস্কারের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি অস্ত্রধারীরা জলপাই রঙের পোশাকেপরিহিত ছিল। অস্ত্রধারীরা সবাই জেএসএসের। প্রাথমিক তদন্তে হত্যাকান্ডের ঘটনার সঙ্গে সরাসরি ৫ জন জড়িতছিল। তবে তাদের সঙ্গে আর কারা কারাজড়িত তা তদন্ত কওে জানা যাবে। নিহত রতন তঞ্চঙ্গ্যা ছাড়া বাকী ৫ জনের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলাতে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.