খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় আবারো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সমতল এলাকায় বাঁশ পরিবহন। গেল ১ জুন থেকে বাঁশ পরিবহন বন্ধ করে দেয়ায় মাইনী নদীতে আকটা পড়েছে কোটি টাকা মূল্যের নানা প্রজাতির দেড় লক্ষাধিক বাঁশ। তাই রাজস্ব পরিশোধ করে মজুদ করা বাঁশ পরিবহনের মেয়াদ বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
করোনা ভাইরাসের কারনে নির্ধারিত সময়ে পরিবহন করতে না পারায় এ দাবী জানান তারা। এদিকে বাঁশ পরিবহনের মেয়াদ বাড়ানোর দাবী জানিয়ে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বরাবরে আবেদন করার পরও অনুমতি মিলেনি বলে জানা যায়। তাই যেকোনো মুহুর্তে মাইনী নদীর ¯্রােতে বাঁশ ভেসে যাওয়ার আশংকায় শংকিত ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় বাঁশ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মে মাসে সরকারি রাজস্ব পরিশোধ করে উপজেলার দুর্গম নাড়াইছড়ি বনাঞ্চল থেকে নদীপথে প্রায় দেড় লক্ষাধিক নানা প্রজাতির বাঁশ সড়ক পথে পরিবহনের জন্য মাইনী নদীতে মজুদ করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে ১ জুন থেকে বাঁশ পরিবহন বন্ধ করে দেয়ায় এই বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ী ঢলের স্রোতে মজুদ করা বাঁশ ভেসে যাওয়া আংশকা দেখা দিয়েছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে বাঁশগুলো পরিবহন করতে না পারলে ব্যবসায়ীদের গুনতে হবে মোটা অংকের লুকসানের হিসাব। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বাঁশ মাইনী নদীর স্রোতে ভেসে গেছে বলেও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
বাবুছড়া বাঁশ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অরুন বিকাশ চাকমা জানান, প্রতি বছর বাঁশের বংশ বিস্তারের জন্য জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস বাঁশ কর্তন বন্ধ রাখা হয়। তবে মে মাসে সরকারি রাজস্ব দিয়ে যেসব বাঁশ কর্তন করা হয় তা নির্ধারিত সময়ে পরিবহন করতে না পারলে প্রতি বছরই পরিবহনের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বরাবর আবেদন করার পরও এখনো মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। যার ফলে এই বর্ষা মৌসুমে নদীর স্রোতে বাঁশ ভেসে যাওয়ার আশংকায় ব্যবসায়ীরা শংকিত। তাই ব্যবসায়ীদের লুকসানের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব মজুদকৃত বাঁশ পরিবহনের মেয়াদ বাড়ানোর দাবী জানান তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য নাড়াইছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা গোলাম রসুলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করার পরও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সরেজমিন পরিদর্শন করে মাইনী নদীতে বাঁশের মজুদ দেখে পরিবহনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য তিনি বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নিকট প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে ।
ব্যবসায়ীদের দাবীর সাথে একমত পোষন করে দীঘিনালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী মোঃ কাশেম জানান, যেহেতু সরকারি রাজস্ব পরিশোধ করে বাঁশগুলো মজুদ করা হয়েছে সেহেতু সড়ক পথে পরিবহনের মেয়াদ বাড়ানো প্রয়োজন। কারন পরিবহনের মেয়াদ বাড়ানো না হলে ব্যবসায়ীরা মোটা অংকের লুকসানের শিকার হবে তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তাই দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ জরুরী ভিত্তিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.