রাঙামাটিতে করোনার ল্যাব দ্রুত স্থাপনের দাবী চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়ের

Published: 06 Jun 2020   Saturday   

চাকমা সার্কেলের চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য রাঙামাটিতে পিসিআর ল্যাব মেশিন অতিদ্রুত স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন।

 

তিনি বলেন,চট্টগ্রাম থেকে অনেক সময় করোনা পরীক্ষার সঠিক রিপোর্ট আসছে না ও রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হচ্ছে। তাই তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে রাঙামাটিতে পিসিআর ল্যাব মেশিন স্থাপন করা গেলে লোকজন আক্রান্ত হয়েছে কিনা জানতে পারবে ও আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত কোয়ারেণ্টটাইনে নেয়া সম্ভব হবে।


শুক্রবার রাঙামাটিতে চাকমা রাজ কার্যালয়ে পার্বত্য জেলায় করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি ও ত্রাণ বিরতণ বিষয়ে প্রিণ্ট ও ইলেকট্রন্ক্সি মিডিয়ার কর্মীদের সাথে আলাপকালে তিনি এই দাবী জানান। এসময় পার্বত্য নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান উপস্থিত ছিলেন।


চাকমা রাজা আরো বলেন, করোনার কারণে যারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এসব অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে যে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা রাঙামাটিতে অত্যন্ত অপ্রতুল। কয়েকটি এলাকায় সরকারী ও বেসরকারীভাবে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হলেও প্রত্যান্ত এলাকা সাজেক ভ্যালী, ঠেগা ভ্যালী, দক্ষিণের মিয়ানমার সীমান্তের ফারুয়া ইউনিয়নের বটতলীা এলাকাসহ দুর্গম প্রায় ৪০টি গ্রামের লোকজন এখনো একেবারে কোন ত্রাণ সহায়তা পায়নি। এই তালিকা আরো দিন দিন বাড়ছে। চাকমা রাজ কার্যালয় থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে তালিকা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সঠিক তালিকা সংগ্রহ করে পার্বত্য মন্ত্রনালয়, খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব ও রাঙামাটিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবের কাছে তালিকা প্রেরণ করা হবে। বিশেষ করে জুমিয়া পরিবার, অভ্যান্তরীন উদ্ধাস্তুু ও পেশাগত কারণে বেকার হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার লোকজন রয়েছেন। তিনি এসব দুর্গম ও অসহায় লোকজনদের দ্রুত ত্রাণ সহায়তা পৌছে দেয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান।


তিনি বলেন, ত্রান সহায়তা হয়তো সাপছড়িতে করোনার কারণে ৭/৮বারও পেয়েছে। তার জানা মতে একটা, বা দুটা বা তিনটা গ্রামে এনজিও ও বেসরকারী সংস্থা থেকে পেয়েছে। কিন্তু সাজেকের শিয়ালদহ মৌজায় দুইটা গ্রামে বা তিনটা গ্রামে এনজিও থেকে চাউল পেয়েছে আর কতগুলো মৌজা রয়েছে একটা ডানাও চাউল সরকারী তরফ থেকে পায়নি। তবে রাষ্ট্রের পাশে এনজিও নেমেছে, ব্র্যাক বেশ ভালো কাজ করছে বলে শুনেছি। পার্বত্য নাগরিক সমাজ থেকেও কাজ করছে।


চাকমা রাজা আরো বলেন, ত্রাণ সহায়তার ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তার সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। কিন্ত এখানে সরকারের কর্মকর্তা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মধ্যে বোঝাপোড়ার প্রচুর অভাব রয়েছে।


তিনি বলেন, দুর্গম দুমুদুম্যা এলাকায় সেনাবাহিনী চাল দিয়েছে আমি খুশি হয়েছি। বিজিবি ও সেনাবাহিনীর জন্য হেলিকপ্টারের মাধ্যমে যেভাবে রশদ দেয়া হয় এই করোনা পরিস্থিতিতে সেভাবে যদি অন্যান্য প্রত্যান্ত দুর্গম গ্রামে রশদ দেয়া হতো ভালো হতো।


রাজা দোবশীষ রায় আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য স্বপ্ল, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদের কর্মসূচি গ্রহন করতে হবে। স্বপ্ল মেয়াদের মধ্যে বিশেষ করে খাদ্য শস্যর মধ্যে দশ টাকার চাল পার্বত্য জেলা পরিষদ ও ইউনিয়নের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে তা বৃদ্ধি করতে হবে। বিশেষ করে ভৌগলিকগতভাবে প্রত্যান্ত অঞ্চলে যারা বসবাস করে, কর্মসংস্থান অভাবের কারণে বেকার রয়েছে,জুমিয়া পরিবার ও অভ্যান্তরীন উদ্ধাস্তুু পরিবার রয়েছে। মধ্য মেয়াদের মধ্যে বাৎসরিক পকিল্পনায় ইউনিয়ন ও উপজেলাগুলোতে কর্মসংস্থান ও ভূমি অধিকারের অবস্থার এলাকাগুলো চিহিৃত করে জনগোষ্ঠী প্রান্তিকতা ও ভৌগলিক অবস্থা যাচাই-বাছাই করে সরকার বরাদ্দ দিতে পারে।

 

আর দীর্ঘ মেয়াদের মধ্যে জনসংখ্যা পরিসংখ্যান অনুযায়ী কোন কোন জনগোষ্ঠী কত শতাংশ লেখাপড়ায় শিক্ষিত হয়েছে তার ডাটা ব্যাচ তৈরী করতে হবে। কোন জনগোষ্ঠী থেকে কারিগরী, সাধারন শিক্ষায় শিক্ষায় বা অন্যান্য শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে তা সম্পূর্ন একটা পরিসংখ্যানে আসুক। এসব  নিয়ে সরকার, পার্বত্য মন্ত্রনালয়,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড,রাজ কার্যালয় মিলে একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করতে পারে। এতে করে এলাকায় আর্থ সামাজিক অবস্থা উন্নতি ঘটতে পারে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত