খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা এরশাদ চাকমা নামে এক পোষাক কর্মীর শরীরে করোনা প্রজেটিপ রিপোর্ট নিয়ে এলাকায় নানা প্রকার বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। এরশাদ চাকমা নিজেও করোনায় আক্রান্ত নন বলে দাবী করেছেন। কারণ তার করোনায় সংক্রমিত হওয়ার মত কোনো উপস্বর্গ কিংবা লক্ষণ তার শরীরে নেই বলেও দাবী করেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইফেও এরশাদ চাকমার নমুমা পরীক্ষায় করোনা প্রজেটিপ রিপোর্টকে ভিত্তিহীন ও গুজব বলে দাবী করা হয়েছে। তাই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য বৃহস্পতিবার সকালে নতুন করে এরশাদ চাকমার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। শুধু এরশাদ চাকমা নয় তার সাথে থাকা আরও ১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি উপজেলার কামক্কোছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়টিকে লকডাউন করা হয়েছে।
জানা যায়, গেল ১৮ এপ্রিল থেকেই নারায়নগঞ্জ ফেরত পোষাক কর্মী এরশাদ চাকমাকে উপজেলার কামক্কোছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানোর পর গত ২৯ এপ্রিল তার শরীরে করোনা প্রজেটিপ ধরা পড়ে। তবে করোনা প্রজেটিপ রিপোর্টটি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না এরশাদ চাকমা। বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে কথা হয় তার সাথে। তিনি জানান, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার মত কোনো প্রকার উপস্বর্গ কিংবা লক্ষণ আমার শরীরে নেই। শারীরীক দিক থেকে আমি পরিপূর্ণভাবে সুস্থ্য আছি। প্রয়োজনে একাধিকবার নমুনা পরীক্ষারও দাবী জানান তিনি। একই সাথে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা এরশাদের স্ত্রী পূর্ণা চাকমাও তার স্বামী পরিপূর্ণভাবে সুস্থ্য বলে দাবী করেন।
এদিকে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে অবস্থানরত আরেক পোষাক কর্মী রিকেল চাকমা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইফে এসে এরশাদ চাকমার শরীরে করোনা প্রজেটিপ রিপোর্টকে ভিত্তিহীন ও গুজব বলে দাবী করেন। তাই এ বিষয়য়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সাধারন লোকজনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ তনয় দেওয়ান জানান, পোষাক কর্মী এরশাদ চাকমার শরীরে করোনা প্রজেটিপ রিপোর্ট নিয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করার জন্য নতুন করে এরশাদ চাকমার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শুধু এরশাদ চাকমা নয় তার সাথে থাকা আরও ১০ জনসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিন জন স্বাস্থ্য কর্মীরও নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্যাহ পোষাক কর্মী এরাশাদ চাকমার শরীরে করোনা প্রজেটিপ নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করার জন্য নতুন করে নমুনা সংগ্রহের সত্যতা স্বীকার করে জানান, হোম কোয়ারেন্টাইন শেষে কামাকোছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে যে তিন পোষাক কর্মী বাড়িতে চলে গিয়েছিল তাদেরকে পুরনায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে আসা হয়েছে। তাছাড়াও তাদের বাড়িঘরসহ বিদ্যালয়টি লকডাউন করা হয়েছে। বর্তমানে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬২ জন পোষাক কর্মী প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে উপজেলার ৪৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ৮৭৭ জন পোষাক কর্মী প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন শেষে ২৩১ জন পোষাক কর্মী বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.