রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টাইন করবে জেলা প্রশাসন। রাঙামাটি শহরের প্রবেশ মুখ মানিকছড়ি থেকে বাইরে থেকে আসা লোকদের সাপছড়িতে এনে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।
এদিকে, এ খবরে আতংকে দিন কাটাচ্ছে রাঙামাটি সদরের সাপছড়ি গ্রামের মানুষ। কোয়ারেন্টাইন করার প্রতিবাদ ও তা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবীতে মঙ্গলবার সকালে সাপছড়ি মধ্য পাড়ায় জড়ো হয় শতাধিক পাহাড়ি নারী-পুরুষ।
গ্রামবাসীরা বলেন, তারা বর্তমানে করোনা মুক্ত আছেন। বাইরে থেকে আসা মানুষদেরকে সাপছড়িতে এনে রাখা হলে তারা অনিরাপদ হয়ে পড়বে। জোর করে সাপছড়িতে কোয়ারেন্টাইন করা হলে তারা গ্রাম ছেড়ে চলে যাবার কথাও বলেন।
গ্রামের কার্বারী সঞ্জিরা চাকমা বলেন, করোনা ভাইরাস দেশে পাওয়ার পর গ্রাম থেকে কেউ বাইরে যেতে পারছে না প্রবেশও করতে পারছে না। আমরা কঠোরভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করছি। কিন্তু শুনেছি এখানে প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টাইন করা হবে। এটি গ্রামের মানুষ চায় না। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টাইন বানানো হলে গ্রামের মানুষ ঝুঁকিতে পড়বে। সাপছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চারিদিকে ৮টি গ্রাম রয়েছে। এগুলো সবই করোনা ঝুঁকিয়ে পড়বে।
গ্রামের শুক্র কুমার চাকমা (৫০) বলেন, আমরা এটি করতে দিব না। যদি জোর করে করা হয় তাহলে আমরা সবাই গ্রাম ছেড়ে চলে যাব। আমরা বর্তমানে সবাই নিরাপদে আছি। বাইরে থেকে লোক এখানে আনা হলে আমরা ঝুকির মধ্যে পড়ব।
তিনি আরো বলেন, সাপছড়ি স্কুলের সামনে গভীর নুলকুপ থেকে গ্রামের মানুষ বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করে। তাছাড়া এখানে সামান্য বাজার বসে। গ্রামের মানুষ তাদের উৎপাদিত জিনিস এখানে নিয়ে আসছে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারন্টোইন করা হলে সবকিছু বন্ধ হবে।
সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৃনাল কান্তি চাকমা বলেন, আমার ইউনিয়ন পরিষদের পাশে প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টাইন করা হবে এটি আমি অবগত নই। গ্রামবাসীর মাধ্যমে জানতে পেরে জেলায় খবর নিয়ে জেনেছি খবরটি সঠিক। যেখানে কোয়ারেন্টাইন করা হবে সেখানে পাহাড়ি বাঙালী ঘন বসতি রয়েছে। চারদিকে গ্রাম রয়েছে। এখন গ্রামের মানুষ এটি চাচ্ছে না। তারা খুব আতংকে আছে। এটি অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার দাবী তুলেছে।
গ্রামের মানুষ তার কাছে এসে অভিযোগ করেছে। তারা এটি চাচ্ছে না। করা হলে তারা গ্রাম ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন। বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসনকে জানাবেন বলে জানান।
জেলা সমাজ সেবার উপ পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুখ বলেন, বিষয়টি ভুল বুঝাবুঝি হচ্ছে। সরকারী ছুটি শেষে তাদের কোন কর্মকর্তা রাঙামাটিতে আসলে তাদের সেখানে রাখা হবে। সেখানে কোন করোনা রোগী রাখা হবে না।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.