রাঙামাটির দুটি গ্রামে কর্মহীন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের মাঝে এখনো খাদ্য সহায়তা নেই

Published: 08 Apr 2020   Wednesday   

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অঘোষিত লক-ডাউনের কারণে রাঙামাটি সদরের বালুখালী ইউনিয়নের বসন্ত পাংখোয়া পাড়া ও বরকল উপজেলার শুভলং ইউনিয়নের  কৈতুরখিল মারমা পাড়ার লোকজন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে দুই  গ্রামের  ৮৮টি পরিববার তাদের স্বজনদের নিয়ে কষ্টের দিনযাপন করছেন। এখনো  কোন ত্রাণ সহায়তার তৎপরতা দেখা যায়নি ওইসব এলাকায়।

 

জানা গেছে,রাঙামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ইউনিয়নে প্রায় ১৫শ ফুটের উপরে পাহাড়ের চুড়ায়  এই  বসন্ত পাংখোয়া পাড়া গ্রামে ৩০টি পাংখোয়া পরিবারের বসবাস। যদিও এই পাড়াটি রাঙামাটি সদরের মধ্যে অবস্থিত হলেও দুর্গমতার কারণে গ্রামের লোকজনদের জুরাছড়ি উপজেলার বনযোগীছড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এই গ্রামের লোকজনদের প্রধান পেশা হচ্ছে জুম ও কৃষি চাষ। গ্রামের লোকজন উৎপাদিত কৃষি পন্য বনযোগী ছড়া বাজার ও রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে  জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। অপর পাশ^বর্তী গ্রাম গুচ্ছ মারমা পাড়া। ভৌগলিক কারনে এই কৈতুরখিল মারমা পাড়াটি  বরকল উপজেলার শুভলং ইউনিয়নে আন্দারমানিক ছড়া এলাকার ৩নং ওয়ার্ডে অর্ন্তগত। এই পাড়ায় ৫৮টি মারমা পরিবার রয়েছে। তাদেরও একমাত্র  পেশা জুম ও কৃষি চাষ। এই দুটি গ্রাম দুর্গমতার  কারণে যুগ যুগ ধরে সরকারী-বেসরকারীভাবে  উন্নয়নের ছোয়া বঞ্চিত হয়ে আসছে বরাবর। কিন্তু চলতি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে অয়োষিত লক-ডাউনের কারণে নৌপথের যোগাযোগ বন্ধ থাকায় উৎপাদিত কৃষি পন্য বিক্রি করতে না পারায়  বিপাকে পড়েছেন দুই গ্রামবাসী।  দৃশ্যত তারা কর্মহীন হযে পড়েছেন।

 

 গ্রামের লোকজনদেও সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের কি কি বিষয়ে পদক্ষেপ নিলে এই সংক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে তাদের খুব একটা ধারনা  নেই।  করোনা ভাইরাস সম্পর্কে  সচেতনামূলক লিফলেটও পৌছ দেয়া হয়নি তাদের কাছে। জেলার অন্যান্য এলাকায় কর্মহীন ও অসহায়দের মাঝে খাদ্যশস্য  সহায়তা দেওয়া হলেও এই দুই গ্রামবাসী এখনো কোন  সহায়তা পাননি।      

 

বসন্ত পাংখোয় পাড়ার সাবেক ওয়ার্ড  মেম্বার নিকোলাই পাংখোয়া জানান, সরকারিভাবে চার দিকে ত্রান সহায়তা দেখা গেলেও এ পাড়ায় এখনো কোন ত্রান সহায়তা দেওয়া হয়নি।

 

কৈতুরখিল মারমা পাড়ার বাসিন্দা বৃদ্ধ জচাই মারমা  জানান করোনা ভাইরাস বিষয়ে কেউ গ্রামে এসে দিক নিদের্শনা দেয়নি। আমার রেডিও খবরের মাধ্যমে যা শুনছি তাতে কিছু সচেতনতা হচ্ছি।  তবে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ শ্রমজীবি। কাজ বন্ধ হয়ে পড়ার বিপাকে পড়েছে। মুটুসিং মার্মা জানান,  তার তিন সন্তান রয়েছে।  দিনমজুর করে চলে তাদের সংসার। কাজ বন্ধ হয়ে পড়ার আয় রোজগারও থেমে গেছে। ঘরে যা চাল ছিল আজ পর্যন্ত চলবে।

 

সুবলং ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মধুমিলন চাকমা বলেন, সরকারি স্বল্প বরাদ্দে সবার মাঝে সহায়তা একসাথে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে বরাদ্দ প্রাপ্তি অনুযায়ী পর্যায় ক্রমে সবাইকে সহায়তা পৌছে দেওয়া হবে।

 

বরকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মনজুরুল হক বলেন, করোনা ভাইরানের কারণে সৃষ্ট  পরিস্থিতির কারনে কর্মহীনদের সহায়তার জন্য প্রথম পর্যায়ের ২৩ মে: চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০ মেঃটন বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা ইতিমধ্যে ২৩ মে.টন ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ২ হাজার ৩শ পরিবারকে বিতরন করা হয়েছে।

 

তিনি আরো জানান, করোনা ভাইরানের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারনে প্রকৃত কর্মহীন কেউ বাদ পরে তাকে তাহলে তাদের সংশ্লিষ্ট্য ওয়ার্ড সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করার পরামশ্য দেন। 

 

বরকল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান চাকমা জানান, সরকারি বরাদ্দ এসেছে শুনেছি। তবে কি পরিমান বরাদ্দ এসেছে জানি না। তাকে এখনো কেউ অবগত করেনি।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত