ভূমিহীন কুঁড়েঘর থেকে সুরম্য বাড়িতে ঠাঁই পাবে ৩৪ পরিবার

Published: 05 Feb 2020   Wednesday   

খাগড়াছড়িতে “তৃতীয় নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ (সেক্টর) প্রকল্প ( ইউজিআইআইপি-৩)  এলজিইডি” আওতায় নির্মিত, বঙ্গবন্ধু পৌর আবাসন প্রকল্পের উদ্বোধন হচ্ছে বৃহস্পতিবার।

 

বৃহস্পতিবার জেলা শহরের কুমিল্লাটিলা এলাকায় এই প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৩৪ পরিবারের মাঝে দৃষ্টিনন্দন স্বপ্নের বাড়ির চাবি তুলে দেয়ার মাধ্যমে প্রকল্পের উদ্বোধর করবেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম এমপি। এই প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ১১, বিধবা ৮, স্বামী পরিত্যাক্তা ৪, প্রতিবন্ধী ৭ এবং ৩ মুক্তিযোদ্ধা সহ ৩৪ পরিবার পাবে স্বপ্নের একটি করে বাড়ি। ২ একর ভূমির উপর নির্মিত প্রতিটি ঘরের আয়তন ৫০১ বর্গফুট যার নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছে প্রতিটির ১১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা করে মোট ৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। 

 

সুবিধাভোগী ভূমিহীন ছালেমা বেগম ও জোৎ¯œা নাথ বলেন, আমরা গরিব কোন জমিজমা নেই ভূমিহীন, স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলে সন্তান না থাকায় অনেক কষ্ঠে জীবনযাপন করছি। আমাদের মত গরিব অসহায় মানুষের জন্য শেহ হাসিনা সরকার নিরাপদ আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি করে দিবে কোন দিন তা কল্পনাও করতে পারিনি। এটি আমাদের পরিবারের জন্যে স্বপ্নের বাড়ি।

 

ভূমিহীন বাক প্রতিবন্ধী মো: খোরশেদ ও দুই পা হারা প্রতিবন্ধী মো: রেজাউল করিম বলেন, সরকার পৌর সভার মাধ্যমে বাড়ি তৈরি করে দিয়ে আমাদের মত অসহায় পরিবারদের সারা জীবনের জন্য আশ্রয় করে দিচ্ছেন। যতদিন বেচে থাকবো নামায পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পৌর মেয়রের জন্য দোয়া চাইব।

 

শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা যতীন্দ্র মোহন চক্রবর্তীর ছেলে তপন কুমার চক্রবর্তী এবং  আর এক ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো: নুরুল ইসলাম বলেন, পাকবাহিনীর কাছ থেকে দেশকে স্বাধীন করে ক্ষুধাদারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার ডাকে সারাদিয়ে পরিবার পরিজন ফেলে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছিল তাদের বাবা। দেশ স্বাধীনের দির্ঘদিন পরে হলেও মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে চলেছে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে না হলে এত ব্যয়বহুল দৃষ্টিনন্দন সুন্দর বাড়ি পেতাম না। এটি অনায়াশে আমাদের কাছে স্বপ্নের বাড়ি হয়ে থাকবে আজীবন।

 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাধারণ নাগরিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে সেটি তার মৌলিক অধিকার। এই মৌলিক অধিকার টুকু নিশ্চিত করছে সরকার এটি অত্যন্ত সুখের সংবাদ। খাগড়াছড়িতে বঙ্গবন্ধু পৌর আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে যারা বাড়ি পাচ্ছে তাদের প্রত্যেকের জন্য একটি আশ্রয়স্থল সুখের স্বপ্নের ঠিকানা। এটি সরকারের একটি কল্যাণমুখী উদ্যোগ, রাষ্ট্রের এমন কল্যাণমুখী উদ্যোগকে নাগরিক হিসেবে স্বাগত জানান। এছাড়াও জেলায় ভূমিহীন যাদের মাথা গোঁজার জায়গা নেই আশ্রয়হীন তাদের জন্য সরকারি খাস ভূমি বন্দব¯ত করে দেয়ার মাধ্যমে আবাসন প্রকল্প করে দেয়া হয় তাহলে এদেশে অনেক ভূমিহীন সাধারণ মানুষ তাদের নিরাপদ ঠিকানা খুঁজে পাবে বলে আশাবাদ বক্ত্য করে, এহেন মহতী উদ্যোগের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, খাগড়াছড়ি পৌর সভা এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।    

 

এবিষয়ে, খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র মো: রফিকুল আলম বলেন, আগামী প্রজন্মের জন্য ২০২১ সালের মধ্যে একটি সুন্দর ও পরিকল্পিত বাসযোগ্য আবাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন, ‘সকলের জন্য আবাসন নিশ্চিত করা হবে, বাংলাদেশে কেউ আর গৃহহীন থাকবে না’। তারই ধারাবাহীকতায় খাগড়াছড়ি পৌর সভার মাধ্যমে প্রত্যন্ত এ জেলার প্রান্তিক ভূমিহীন, বিধবা,স্বামী পরিত্যাক্তা, প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাসন নিশ্চিত করতে চাই। তাদের জন্য এটি একটি স্বপ্নের ঠিকানা হবে। ইতোমধ্যেই “তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ (সেক্টর) প্রকল্প ( ইউজিআইআইপি-৩)  এলজিইডি” আওতায় এবং খাগড়াছড়ি পৌর সভার ব্যবস্থাপনায় শহরের সুন্দর কোলাহল মুক্ত পরিবেশে “বঙ্গবন্ধু পৌর আবাসন প্রকল্প” গড়ে তোলা হয়েছে।

 

যে বাড়িগুলো তৈরি করা হয়েছে যারা কখনো ভাবতেই পারেনি একটি পাকা ইমারত সুন্দর একটি পরিপাটি পরিমার্জীত পরিবেশে জীবনযাপন করা সুযোগ পাবে। এ এলাকার প্রান্তিক ভূমিহীন, বিধবা,স্বামী পরিত্যাক্তা, প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো আনন্দ উপভোগ করার মাধ্যমে তাদের জীবনকে নতুন করে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখবে। তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি পৌর প্রশাসন যে ভিশন নিয়েছে পরিবেশ বান্ধব যানযটমুক্ত পরিছন্ন পর্যটনমুখী পৌর শহর গড়ে তোলা। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এই প্রকল্পের মাধ্যমে এক ধাপ এগিয়ে গেছে, এই এগিয়ে যাওয়ার পথে খাগড়াছড়ি জেলাবাসীর সহযোগীতা কামনা করেন মেয়র মো: রফিকুল আলম।

 

এছাড়াও, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম এমপি, খাগড়াছড়ি প্রধান সড়কের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন এবং ড্রেননির্মাণ, স্যানিটারীল্যান্ডফিল এবং এফএসটিপি নির্মাণ, শান্তিনগর রাস্তার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন, খাগড়াছড়ি পৌর কেন্দ্রীয় কবরস্থানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ সহ বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলেও জানান, পৌর মেয়র মো: রফিকুল আলম। 

 --হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত