পাহাড়ে দরিদ্র নারী ও শিশুদের পুষ্টি সচেতনা নিশ্চিতকরণের জন্য কাজ করবে ইউনাইটেড পারপোস

Published: 06 May 2019   Monday   

আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা ইউনাইটেড পারপোস এর সহযোগিতায় ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে তিন পার্বত্য জেলায় লিডারশিপ টু এনসিউর এডুকোয়েট নিউট্রিশন (লীন) প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। ছয় বছর মেয়াদে এই প্রকল্পে তিন পার্বত্য জেলায় ১৮টি উপজেলায় দরিদ্র নারী ও শিশুদের নিরাপদ পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করবে। রাঙামাটির ৮ উপজেলায় প্রকল্পের বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় বেসরকারী সংস্থা জুম ফাউ্ডেশন। 

 

সোমবার রাঙামাটিতে লিডারশিপ টু এনসিউর এডুকোয়েট নিউট্রিশন (লীন) প্রকল্পের  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজিত এক অবহিতকরণ সভায় এ কথা জানানো হয়েছে।

 

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সন্মেলন কক্ষে অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য রেমলিয়ান পাংখোয়া। জুম ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সুজল চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা পরিষদ সদস্য শাত্বনা চাকমা,জেলা সিভিল সার্জন ডা. শহীদ তালুকদার, রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রকল্পের ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড পারপোস এর লীন প্রকল্প পরিচালক সৌভাগ্য মঙ্গল চাকমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের জেলা ব্যবস্থাপক রাজীব দাশ গুপ্ত। অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

 

অবহিতকরণ সভায় বলা হয়, “লিডারশিপ টু এনসিউর এডুকোয়েট নিউট্রিশন (লীন)” প্রকল্পের লক্ষিত জনগোষ্ঠী তিন পার্বত্য জেলার (রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি) আওতাধীন ১৮টি নির্বাচিত উপজেলার ৭৮ ইউনিয়নের ৩,৫৩৩টি গ্রামের মোট ৯৭৬,৬৪১ জন সেবা বঞ্চিত গ্রামাঞ্চলের মানুষ। প্রকল্পটি ২৮২,০০০ জন গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মহিলা ও শিশুর পুষ্টি উন্নয়নে কাজ করবে। এছাড়াও ৫ বছরের কম বয়সী বাচ্চা এবং কিশোরী বলিকাদের পূর্ণাঙ্গ পুষ্টি সংবেদনশীল ও পুষ্টি ভিত্তিক খাদ্যের বহুমুখীতা, সর্বাপেক্ষা ঝুকিপূর্ণদের জন্য আয় সম্বলিত জীবনযাত্রার মডেল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যাতে করে স্থানীয়, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ের সকল স্তরে পুষ্টি সংবেদনশীল গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে।

 

প্রকল্পটির যৌথভাবে আন্তজাতিক সংস্থা ইউনাইটেড পারপাস-এর নেতৃত্বে হেলভেটাস সুইস ইন্টার কো-অপারেশন, গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন ও কারিতাস বাংলাদেশ-এর কারিগরী সহায়তায় এবং আইডিএফ, কারিতাস বাংলাদেশ এবং জুম ফাউন্ডেশন মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পের সর্বমোট বরাদ্ধ ১১,৫০৮,২২১ ইউরো।

 

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক এলাকায় মানুষ এখনো পুষ্টি বিষয়ে সচেতন নয়। তারা প্রতিনিয়ত পুষ্টিহীনতায় ভুগেন।  এসডিজি পুরণের জন্য এটিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে  রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক  পবন কুমার চাকমা পার্বত্য চটগ্রামের বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখে লীন প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।  সিভিল সার্জন ডা: শহীদ তালুকদার জেলা প্রশাসন এবং জেলা পরিষদের সমন্বয়নের মাধ্যমে পুষ্টি কার্যক্রমকে আরও কিভাবে গতিশীল করা যেতে পারে  সে বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহনের পরামর্শ প্রদান  করেন।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিষদ সদস্য রেমলেয়ানা পাংখোয়া বলেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে বিভিন্ন সরকারী দপ্তর হস্তান্তর করা হয়েছে। তার মধ্যে শিক্ষা,স্বাস্থ্য,প্রানীসম্পদ,সরকারী হাঁস-মুরগী খামার, মৎস্য বিভাগ’সহ বিভিন্ন দপ্তর রয়েছে। তাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করলে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাগুলো প্রত্যান্ত এলাকায় বসবাসরত মানুষের পুষ্টি সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভুমিকা রাখবে।

 

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভৌগলিক অবস্থানের কারণে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে সীমাবদ্ধতার মাঝেও লীন প্রকল্প তাদের কার্যক্রম শুরু  করেছে তা অত্যান্ত আশাম্বিত।  তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে কোন সহযোগিতা প্রদান করেন।  

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত