পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে সক্রিয় আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান সন্তু লারমার

Published: 10 Nov 2018   Saturday   

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা) বলেছেন, শাসকগোষ্ঠী জুম্ম জনগনের অস্তিত্ব চিরতরে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য নানান ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আজকে পার্বত্য মানুষ একটা নিরাপত্তাহীনতা, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে, নানান নির্যাতন,দমন নপীড়ন শিকার হতে হচ্ছে। জনসংহতি সমিতির সমিতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে।

 

পার্বত্য চট্টগ্রামকে শাসন ও নিয়ন্ত্রণ করছে, যারা বুক ফুলিয়ে পার্বত্যাঞ্চল থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, চাদাবজি বন্ধ করতে বলে থাকে তাদের জিজ্ঞাসা করে সন্তু লারমা বলেন, তারাই তো পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তারাই চুক্তি বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত করতে চুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফ সৃষ্টি করেছে। পরবর্তীতে এমএন লারমা জনসংহতি সমিতি, গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ সৃষ্টি করেছে। এসব সংগঠনের সাথে আতাত করে অস্ত্রবাজি, চাদাবাজিসহ নানান নিপীড়ন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তাই পার্বত্য জনগণ এসব থেকে উত্তোরণ ও  মুক্তি চাই, শান্তিপূর্নভাবে বসবাস করতে চাই।

 

শনিবার রাঙামাটিতে  সাবেক সাংসদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার(এমএন লারমা) ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শোক র‌্যালী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এ কথা বলেন।

 

জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে স্মরণ সভায়  পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা শাখার সভাপতি কিশোর কুমার চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি আসনের সাংসদ উষাতন, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য গৌতম কুমার চাকমা,শিক্ষাবিদ প্রফেসর মংসানু চৌধুরী, মানবধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, আদিবাসী ফোরামের পার্বত্যাঞ্চল শাখার সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। স্বাগত বক্তব্যে দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা। অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্যে দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির সাধারন সম্পাদক অরুন ত্রিপুরা ও হিল ইউমেন্স ফেডারেশনের জেলা শাখার সভাপতি রীনা চাকমা। শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন মোনালিসা চাকমা। অনুষ্ঠান শুরুতে আন্দোলন সংগ্রামে নিহতদের স্মরণে দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জালন করা হয়।

 

এর আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বর থেকে একটি শোকর‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি বনরুপাস্থ পেট্রোল পাম্প চত্বর ঘুরে আবারও জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বরে গিয়ে শেষ। পরে সেখানে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ বেদীতে এমএন লারমা প্রতিৃকৃতিতে সন্তু লারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতৃবৃন্দ, নানান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পূষ্প্যমাল্য  করা হয়।

 

সন্তু লারমা আরো বলেন, সন্তু লারমা বলেন, সম্পাদিত পার্বত্য চুক্তির ২১ বছর অতিবাহিত হলেও সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে অনিহা,শংকাসহ নানান অন্তরায় সৃষ্টি  করে চলেছে।  পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি ৩৫ বছর আগে যা ছিল ২১ বছরের মধ্যে কোন মৌলিক পরিবর্তন হয়নি। পার্বত্য  চুক্তি বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত করতে শাসকগোষ্ঠী পঞ্চবাহিনী ও কুচক্রির সাথে আতাত করে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতাকে জিইয়ে রেখেছে।

 

তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা জুম্ম জনগনের আত্ননিয়ন্ত্রনাধিকার প্রতিষ্ঠা লড়াইয়ে ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে যুব সমাজসহ সকলকে অধিকতর সক্রিয় হয়ে আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।

 

উষাতন তালুকদার এমপি বরেন, পার্বত্য চুক্তির ২১ বছরেও চুক্তির মৌলিক বিষযকগুলো বাস্তবায়িত হয়নি। সাধারন প্রশাসন, আইন-শৃংখলা,বন-পরিবেশ বিভাগকে হস্তান্তর করা হয়নি। পার্বত্য মন্ত্রনালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ নিধিরাম সর্দার পরিণত রয়েছে।  

 

 পার্বত্য চট্টগ্রামের যে পরিস্থিতি দাড়িয়েছে একটা সংকট অবস্থায় কাটাতে হচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, কেন একটা জড়তা, আতংক অজানা এক ভয়ের মধ্য দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আমরা তো এদেশেরও নাগরিক।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত