রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান বলেছেন, রাঙামাটি লংগদু উপজেলার তিনটি গ্রামে গেল ২ জুন সংঘটিত অগ্নি সংযোগের ঘটনায় পুড়ে যাওয়া পাহাড়ীদের ১৭৬টি ঘর-বাড়ি পূর্ণ নির্মাণ করে দেবে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রায়ন প্রকল্প মাধ্যমে আগামী নভেম্বর মাস থেকে এই গৃহ নির্মাণ কাজ শুরু হবে এবং এক বছর পর্ষন্ত খাদ্য সহায়তা প্রদান করবে।
মঙ্গলবার রাঙামাটির লংগদু উপজেলার তিনটি পাহাড়ী গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব প্রতিশ্রুতি দেন।
উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও ইউএনডিপি’র পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে এসময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাদ্দেক মেহেদী ইমাম, ইউএনডিপি-সিএইচডিপি’র কর্মকর্তা ঐশর্য্য চাকমা ও ঝুমা দেওয়ান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপজেলার তিনটিলা, বাট্টাপাড়া, ও মানিকজোর ছড়ার অগ্নিকান্ডে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ ১৭৬টি পরিবারের মাঝে ৪২ লক্ষ টাকা এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ৪৮ পরিবারের মাঝে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
এদিকে, সরকারের পুর্ণবাসনের আশ্বাস পাওয়ার পর রাঙ্গামাটি লংগদুর তিনটি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ পাহাড়ীরা বসত ভিটায় ফিরতে শুরু করেছে। তারা অস্থায়ী চালা ঘর তৈরী করে বসবাস শুরু করেছেন। তবে অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে, ভাড়া বাসায় ও আত্বীয়-স্বজনদের বাড়িতে রয়েছেন। সরকার থেকে দুই বান্ডিল ঢেউ টিন ও ৩০ কেজি চাল দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য গেল ১ জুন দিঘীনালা-খাগড়াছড়ি সড়কের খাগড়াছড়ি সদর থানার চার মাইল এলাকায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ পাওয়া যায়। পরদিন গেল ২ জুন সকালে লংগদুর বাট্ট্যাপাড়া থেকে লংগদু সদর পর্যন্ত লাশ নিয়ে স্থানীয় বাঙালীরা মিছিল বের করে। এ সময় তিনটিলা,মানিকজোড় ছড়া ও বাট্টাপাড়ায় পাহাড়ীদের ঘর বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে ২১২টি পাহাড়ীদের ঘরবাড়ি ও ৮টি দোকানঘর সম্পুর্ণ পুড়ে যায়। আগুনে পুড়ে মারা যান গুণামালা চাকমা নামে এক বৃদ্ধা।
এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় ৬৯জনকে আটক করলেও অধিকাংশ জামিনে রয়েছেন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্নবাসনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এতে প্রতিটি বাসগৃহের জন্য ৩ কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা ঘর, ১টি রান্নাঘর ও ১টি শৌচাগারের জন্য প্রক্কালিত মূল্য আইটি ভ্যাটসহ ৫লাখ ২৫ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। তবে প্রতিটি বাসগৃহ নির্মানের জন্য চাহিদা অনুযায়ী আইটি ভ্যাট শতকরা ১০ শতাংশ বাদ দিয়ে ৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা ধরা হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.