রাঙামাটিতে পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটক শুন্য

Published: 28 Jun 2017   Wednesday   

ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর রাঙামাটির অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে হাজার হাজার পর্যটক ঘুরতে আসলেও এবার চিত্র ভিন্ন। শহরের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল থেকে শুরু করে পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকের ভাটা পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে রাঙামাটির পর্যটন ব্যবসায় ধস নামার সম্ভাবনা রয়েছে বলে পর্যটন ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

 

প্রতি বছর পবিত্র ঈদ-উল-আযহা ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাহাড় আর কাপ্তাই হ্রদের অপরুপ জলরাশির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন। দেশের দুরদুরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা ভিড় জমান পর্যটন ঝুলন্ত সেতুসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে। কিন্তু এবার ঈদে এসব পর্যটন স্পটগুলোতে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। হাতে গোনা কয়েকজন পর্যটককে ঘুরতে দেখা গেছে। তারাও রাঙামাটির ও পাশ্ববর্তী জেলার রাঙ্গুনিয়া এলাকা থেকে ঘুরতে এসেছেন। তবে দেখা মিলেনি দুরদুরান্ত থেকে পর্যটকদের। কয়েকজন পর্যটকরা জানান প্রতিবছর প্রচুর সংখ্যক লোকজনের ভিড় থাকলেও এবার লোকজন একেবারে নেই। পাহাড় ধসের ভয়ভীতি থাকার কারনে এবার লোকজন নেই।


অপরদিকে, রাঙামাটি শহরের টেক্সটাইল মাকের্টে পর্যটক না আসায় নেই কোন বেচাকেনা। পর্যটক না আসায় কয়েশত বোট চালক বেকার হয়ে পড়েছেন।


প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গেল ১৩ জুন পাহাড় ধসে রাঙামাটি শহরের ভেদভেদীর যুব উন্নয়ন বোর্ড এলাকা,মুসলিম পাড়া.শিমুলতলী এলাকা,সাপছড়ি,মগবান,বালুখালী এলাকায় এবং জুরাছড়ি,কাপ্তাই,কাউখালী ও বিলাইছড়ি এলাকায় ৫ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের মৃত্যূ হয়। পাহাড় ধসের ঘটনায় রাঙামাটি শহরে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ হাজার ২শ মানুষ আশ্রয়ে রয়েছেন। এ ঘটনায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ির শালবাগান এলাকায় প্রায় দেড়শ ফুট জায়গায় মাটি ধসে পড়লে সারাদেশের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় এক সপ্তাহের পর রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। এছাড়া আভ্যন্তরীণ সড়ক রাঙামাটি-মহালছড়ি-খাগাছড়ি এবং আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক পাহাড় ধসের ঘটনার পর যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই এ অবস্থায় এবার ঈদের ছুটিতে রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকের সংকট দেখা দিয়েছে।

 

রাঙামাটিতে পর্যটনের আকর্যনীয় স্পটের মধ্যে রয়েছে,পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝর্ণা,রাজ বন বিহার,জেলা প্রশাসনের বাংলো,চাকমা রাজবাড়ী,রাজ বন বিহার, বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধি সৌধ, বালুখালী কৃষি খামার, টুক টুক ইকোভিলেজ,সাংপাং রেস্টুরেন্ট এবং আদিবাসীদের শান্ত সবুজ গ্রাম।

 

হলিডে কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতুর নৌঘান ঘাটের ম্যানেজার মোঃ রমজান আলী জানান, গেল ১৩ জুন পাহাড় ধসের কেন্দ্র করে ঈদের ছুটিতে পর্যটক নেই। যার কারণে হাজার হাজার টাকার লোকসান গুনতে হবে। তাছাড়া এ ঘাটের একশত বোট মালিক চালক বেকার হয়ে পড়েছেন।


হোটেল গ্রীন ক্যাসেলের ব্যবস্থপনা পরিচালক ইমতিয়াজ সিদ্দিক জানান, ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে তার হোটেলে শতকরা ৮০ শতাংশ অগ্রিম বুকিংও ছিল। কিন্তুপ্রকৃতির বৈরি আচারনের কারণে সেই সব বুকিং বাতিল করা হয়েছে।


তিনি আরো জানান,বর্তমানে কিছু কিছু পর্যটক ফোন দিচ্ছেন তারা রাঙামাটিতে আসতে চান,রাঙামাটির অবস্থা ও দুর্যোগপূর্ন মানুষকে দেখতে চান। আমরাও পর্যটকদের উপর আশাবাদী তারা রাঙামাটিতে ঘুরতে আসবেন। কারণ বর্তমানে যাতায়াতের রাস্তাও যথেষ্ট স্থিতিশীলতা এসেছে। 

 

রাঙামাটি সরকারী পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, প্রতি বছর ঈদের পরের দিন থেকে হলিডে কমপ্লেক্স ও ঝুলন্ত সেতুতে দৈনিক আট থেকে দশ হাজার পর্যটক ভিড় জমান। এবার আশানুরুপ পর্যটক নেই। যার কারনে যে লক্ষ্যমাত্র ছিল সেরকম আয় হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তার মতে,গেল ১৩ জুন প্রাকৃতি বিপর্যয়ের কারণে রাঙামাটি পর্যটনস্পটগুলোতে তেমন একটা পর্যটক আসছে না।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত