সকল আদিবাসীদের স্ব স্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণসহ পাঠ্য বইয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শব্দটির পরিবর্তে আদিবাসী শব্দটি চালুর দাবীতে সোমবার রাঙামাটিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যুগ যুগ ধরে আদিবাসী জুম্মরা তাদের স্বকীয়তা, স্বতন্ত্র ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও জুম্মদের বৈশিষ্ট্য সমোন্নত রেখে ১৪টি জুম্ম জনগোষ্ঠী বসবাস করে আসছে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি আজ ১৯ বছর অতিক্রান্ত হলেও চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো যথাযথ বাস্তবায়িত না হওয়ায় স্ব-স্ব ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সমাবেশে বক্তারা আদিবাসীদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে অবিলম্বে মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালু, আদিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, জাতীয় পাঠ্য পুস্তত থেকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শব্দটি বাতিল করে আদিবাসী শব্দ চালু ও পার্বত্য চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নের দাবী জানান।
পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কলেজ শাখার উদ্যোগে রাঙামাটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে আয়োজিত ঘন্টাব্যাপী মানবন্ধন পালন করা হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন দাবী-দাওয়া সম্বলিত প্লেকার্ড,পেস্টুন নিয়ে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীসহ কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। মানবন্ধন চলাকালে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখার সভাপতি সম্রাট সুর চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্যে রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা কমিটির ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক ত্রিজিনাদ চাকমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক রিন্টু চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখার সাধারন সম্পাদক দীপা চাকমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি শহর শাখার সভাপতি ছাত্রনেতা পলাশ চাকমা।
বক্তারা আরো বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী আদিবাসীদের স্ব-স্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালু করার কথা বলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আদিবাসীদের মাতৃভাষায় শিক্ষার পদ্ধতি প্রচলনের উদ্যোগ হিেেসবে এ বছর পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি ভাষাসহ দেশের মোট পাঁচটি আদিবাসী ভাষায় প্রায় ২৫ হাজার ছাত্রছাত্রীর জন্য ৫০ হাজার বই ছাপিয়ে বিলির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। পার্বত্য অঞ্চলে অধিকাংশ স্কুলে আদিবাসী ছাত্রছাত্রীরা মাতৃভাষায় বই পায়নি। তাছাড়া মাতৃভাষায় বই পড়ানোর জন্য সরকার শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতির কোন ব্যবস্থা করেনি। বই পড়ানোর শিক্ষক শিক্ষিকা যদি নাই থাকে তাহলে বই সরবরাহ করা অর্থহীন ।
সমাবেশে বক্তারা আদিবাসীদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে অবিলম্বে মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালু, আদিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, জাতীয় পাঠ্য পুস্তত থেকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শব্দটি বাতিল করে আদিবাসী শব্দ চালু ও পার্বত্য চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন ও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেগুলোতে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত কোটা আসন বৃদ্ধি করার দাবী জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.