বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ জন চিকিৎসকের মধ্যে কর্মস্থলে একজনও নেই!

Published: 31 Jan 2017   Tuesday   

রাঙামাটির বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪টি চিকিসৎক পদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে ১০টি পদ খালী রয়েছে। তবে ৫জন চিকিৎসককে কাগজে কলমে কর্মরত দেখালেও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকেন। অপর ৪ জন চিকিৎসকদের একজন বদলী ও ৩ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষনে রয়েছেন।


জানা যায়, জেলার সীমান্তবর্তী বরকল উপজেলার ১০ শয্যা বিশিষ্ট স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে বাকী ১০ জন চিকিৎসকের পদ দীর্ঘ দিন ধরে শূন্য রয়েছে। কমপ্লেক্সে ৫জন চিকিৎসকের কাগজেপত্রে কর্মরত দেখানো হলেও এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সুইমিপ্রু রোয়াজা মাসের প্রায় সময় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকেন। কর্মস্থলে থাকার কিংবা রোগী দেখার সময় সুযোগ তিনি পান না। মেডিকেল অফিসার ডাঃ ধীমান চৌধুরী সম্প্রতি বদলী হয়ে চলে গেছেন। ডাঃ মামুন রেজা গেল কয়েক মাস ধরে প্রশিক্ষণে রয়েছেন। গেল কয়েকদিন আগে ডাঃ তারেক ভূইঁয়া জাহিন হাসপাতালে যোগদান করেছেন ওই দিনও তিনি প্রশিক্ষণে চলে যান। এর আগে ডাঃ শুভ্রসোম চাকমা পরীক্ষা দিতে চলে যান।


ভুক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ, বর্তমানে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে দিয়ে নাম মাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীদের জেলা সদরের হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়ে থাকে। এতে দুরদুরান্ত থেকে আসা রোগীরা যেমনি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি হয়রানি ও আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। ।


উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার উপেন্দ্র লাল চাকমা জানান,প্রায় সময় চিকিৎসক প্রশিক্ষণও মিটিং থাকায় তারা কর্মস্থলে থাকতে পারেন না। তাদেরকে আন্তঃ বিভাগ ও বহি বিভাগের রোগীদের দেখাশুনা করতে হয়। তবে চিকিৎসকরা যখন কর্মস্থলে থাকেন তারা তখন রোগী দেখে থাকেন। তাদের সার্মথ্যর বাইরে রোগীদের ঝুঁকি নিতে পারেন না বিধায় রোগীদের রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠাতে হচ্ছে।


আইমাছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অমর কুমার চাকমা জানান,গেল জানুয়ারী রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু হাসপাতালে কোন চিকিৎসক নেই। একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার তাকে দেখার পর রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। তিনি একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে ষ্পীড বোট (দ্রুতযান) ভাড়া করে জেলা সদরে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু একজন গরীব অসহায় রোগীর পক্ষে তা সম্ভব নয়। তাই স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষের উপজেলার মানুষদের স্বাস্থ্য সেবার ব্যাপারে সুদৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।


এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সুইমিপ্রু রোয়াজা কর্মস্থলে চিকিৎসক না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,বর্তমানে চিকিৎসকরা কেউ প্রশিক্ষণে কেউ পরীক্ষা দিতে গেছেন। আবার কেউ বদলী হয়ে চলে গেছেন। তাছাড়াও ১০ জন চিকিৎসকের পদ বর্তমানে শুন্য রয়েছে। আর তাকে প্রায় সময় সরকারী প্রশিক্ষণ ও মিটিংয়ে থাকতে হয়। যার কারণে কর্মস্থলে চিকিৎসকের সংকট। প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে এলে চিকিৎসক সংকট দুর করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।


উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিধান চাকমা বলেন, বরকল উপজেলার একটি মাত্র হাসপাতালে ১৪জন চিকিৎসকের মধ্যে একজনও কর্মস্থলে না থাকা সেটা অত্যন্ত দূঃখজনক। যদি কোন প্রশিক্ষণ কিংবা মিটিং থাকে তাহলে হাসপাতাল শুন্য করে যাওয়া মোটেই ঠিক নয়। তবে এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষের সেই খেয়াল রাখা দরকার। যাতে করে এ উপজেলার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত