সোনার বুট জয়ী ফুটবলার চাথুইমা মারমা পায়ের অপারেশনের জন্য সরকারের কাছে সহায়তা কামনা

Published: 24 Sep 2016   Saturday   

পায়ের চোট লাগার কারণে ফুটবল খেলতে পারছে না সোনার বুট জয়ী নারী ফুটবলার রাঙামাটির চাথুইমা মারমা।

 

দেশের হয়ে ফুটবল খেলতে গিয়ে তার পায়ের চোট লাগে। এরপর খেলা থেকে সে  ছিটকে পড়েছে। তার পরিবারের পক্ষে পায়ের অপারেশন করানো কোনভাবে সম্ভব নয়। তাই সে ফুটবল ফেডারেশন অথবা প্রধানমন্ত্রী কাছে সহায়তা চেয়েছে। 

 

সম্প্রতি সোনার বুট জয়ী নারী ফুটবলার ও রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী চাথুইমা মারমার সাথে এ প্রতিবেদক কথা বলার সময় সে এসব জানায়।


জানা যায়, চাথুইমা মারমা ফুটবল খেলে স্টাইকার পজিশনে। তার অসাধারণ ভুমিকায় বঙ্গমাতা ফুটবল প্রতিযোগীতায় রাঙামাটির ঘাগড়ার মগাছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১১ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন লাভ করে। ২০১২, ২০১৩ সালে তার দল রানার্স-আপ লাভ করে। ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও চাথুইমা জিতে নেয় সোনার বুট। পরে চাথুইমা ডাক পড়ে জাতীয় দলে।


আরো জানা যায়, ২০১৪ সালে শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত এএফসি অনুর্ধ-১৪ দলের বাংলাদেশ দলের সদস্য হয় চাথুইমা। ২০১৫ সালে নেপালে একটি টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার আগে ঢাকায় জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্পে অনুশীলনের সময় তা বাম পায়ে চোট পেয়েছিল চাথুইমা। এরপর ফুটবল থেকে ছিটকে পড়ে সে। এ থেকে পায়ের চোট নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যত দিন পার করতে হচ্ছে তার।

 

এ প্রতিবেদকের সাথে চাথুইমা মারমা ফুটবলের কথা বলতে গিয়ে আবেগাফ্লুত হয়ে বলে, তার বন্ধুরা যখন প্রতিপক্ষের জালে গোল দিতে পারে না তখন মন চায় মাঠে নামতে। মন চায় ফুটবল খেলতে। কিন্তু খেলতে পারছে না। তার খুব খারাপ লাগে। পায়ের চোট আরো বাড়বে এ ভয়ে স্যারেরা তাকে খেলতে নিষেধ করেছেন।

 

সে জানায়,পায়ে চোট পাওয়ার পরেও একটু ভাল হয়ে বল খেললে চোট আরো বাড়ে। চোটে আঘাত লাগলে তার খুব কষ্ট হয়। আঘাত লাগলে চারদিকে অন্ধকার হয়ে আসে। পুরনো চোটে আবার আঘাত লাগবে ভয়ে খেলা বন্ধ করতে হয়েছে।  তবে অপারেশন হলে সে আবার ফুটবল খেলতে পারবে।

 

সম্প্রতি এএফসি অনুর্ধ ১৬ নারী ফুটবল প্রতিযোগতায় খেলোয়াড় ও সতীর্থ আনুচিং মগিনী, আনাই মগিনী, মনিকা চাকমা বলে, তারা চাথুইমার শূণ্যতা অনুভব  করছে। চাথুইমা ছিল তাদের অনুপ্রেরণা। সে অসাধারণ ফুটবল খেলে। কিন্তু আহত হওয়ার পর থেকে সে পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। আমরা যখন খেলি তখন সে মন খারাপ হয়ে বসে থাকে। তার সতীর্থরা চাথুইমার চিকিৎসার জন্য সরকারকে এগিয়ে আসার দাবী জানিয়েছে।


বিদ্যালয়ের ফুটবল প্রশিক্ষক শান্তি মনি চাকমা বলেন, চাথুইমার বাড়ি জেলার কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের বটতলী গ্রামে। গ্রামটি প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। দারিদ্রতার কারণে তার পড়াশুনা শেষ হয়ে যাবে। তবে সে ভাল ফুটবলার হওযায় তাকে ঘাগড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে বিনা বেতনে পড়া সুযোগ দেওয়া হয়েছে।


ঘাগড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুভাষ চাকমা জানান, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন চাথুইমার পায়ের লিগামেন্ট ভাল করার জন্য শল্যচিকিৎসা (অপারেশ) করতে হবে। তা না হলে সে সুস্থ হবে না। চিকিৎসকদের মতে অপারেশন করা দেরী হলে পরবর্তীতে অপারেশন আরো কঠিন হবে। যদি অপারেশন করা হয় তাহলে চাথুইমা পুরোপুরি সুস্থ হবে এবং আবারও ফুটবল খেলতে পারবে। কিন্তু এ অপারেশনের জন্য অর্থ প্রয়োজন। কিন্তু এ পরিমাণ অর্থ বিদ্যালয় পরিচালনার কমিটির কাছে নেই বলে জানান তিনি।

 

তিনি আরো জানান, পার্বত্য জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া ও আর্থিক অসচ্ছল, মেধাবী ও খেলায় প্রতিভা  রয়েছে এমন ছাত্রীদের বিনা বেতনে বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ দিচ্ছি। তাদের খাওয়ার খরচ স্থানীয়রা বহন করছে। তবে চাথুইমার মত কেউ আহত হলে তাদের চিকিৎসার খরচ বহন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত