রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের জামেরছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ নিজামী তিন বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।
জুরাছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কাযালয়ের নথি থেকে জানা যায়, মোহাম্মদ উল্লাহ নিজামী নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের মোঃ মকরম আলীর ছেলে। ১৯৮৭ সালে ৪ এপ্রিল জুরাছড়ি উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের ফকিরাছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরে ২০০৫ সালে ৩১ জানুয়ারি একই ইউনিয়নের জামেরছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদউন্নতি লাভ করে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক শর্তে এক প্রধান শিক্ষক জানান, তিনি ২০১৩ সালে সেচ্চায় অবসরে যাওয়ার জন্য আবেদন করলে আবেদনে জাতীয় পরিচয় পত্রে ও শিক্ষাগত সনদে গরমিল পাওয়া যায়। তার চাকুরী মোহাম্মদ উল্লাহ নিজামী নামে হলেও জাতীয় পরিচয় পত্রে ও শিক্ষাগত সনদে মোহাম্মদ উল্লাহ চৌধুরী রয়েছে। এমন গরমিল ধরা পরার পর থেকে মোহাম্মদ উল্লাহ নিজামী কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ উল্লাহ নিজামী সরকারি চাকরিতে যোগদানের আগে রাঙামাটির আল-আমিন মাদ্রাসার তত্বাবধায়ক ছিলেন। তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল আলম সিদ্দিকী জানান, সরকারি স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির আগে ১৯৮০ থেকে ৮২ সাল পর্যন্ত তত্বাবধায়ক ছিলেন তিনি। বর্তমানে কোথায় আছেন তা তার জানা নেই।
জামেরছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনন্দ ময় চাকমার সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে মোহাম্মদ উল্লাহ নিজামীর বিষয়ে লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশিষ কুমার ধর জানান, মোহাম্মদ উল্লাহ নিজামীর বিষয়ে ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তার সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নামের গরমিল বিষয়ে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে তৎকালিন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা যতন কুমার সেন (বর্তমানে অবসর প্রাপ্ত) বলতে পারবেন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা জানান, মোহাম্মদ উল্লাহ নিজামীর বিরুদ্ধে র্দীঘ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনন্দ ময় চাকমা মৌখিক ও লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে পরিষদের মাসিক সভায় উপস্থাপন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।
রাঙামাটি পুলিশ সুপার মোঃ সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, কোন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় মামলা করবে। এছাড়া পুলিশও ওই ব্যক্তির কোথায় রয়েছেন তার খোঁজখবর নেবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.