নানিয়ারচরের মধ্য আদামে সেনাবাহিনীর সাথে সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলি বিনিময়ঃ আহত ২

Published: 12 Aug 2016   Friday   

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি ও রাঙামাটির সীমান্তবর্তী  নানিয়ারচর উপজেলার মধ্যম আদমে অভিযানের সময় সেনাবাহিনীর সাথে সন্ত্রাসীদের মধ্যে থেমে থেমে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এতে সেনাবাহিনীর দুই জন সদস্য আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাদের সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেনা অভিযানের সময় নিরাপত্তাবাহিনী সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

 

সূত্র জানায়, সম্প্রতি আইসিটি এ্যাক্টে আটক স্থানীয় আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফের এক সদস্যের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মতে সেনাবাহিনীর মহালছড়ি জোনের একটি দল গেল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে খাগড়াছড়ি জেলা মহালছড়ির এবং রাঙামাটির সীমান্তবর্তী  নানিয়ারচর উপজেলার সাবেক্ষং ইউনিয়নের মধ্যম আদমে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেয়।

 

বৃহস্পতিবার এলাকাটি ঘিরে রাখলেও নিরীহ গ্রামবাসী হতাহতের আশংকায় রাতে অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকেন। ইউপিডিএফের সশস্ত্র সদস্যরা স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ব্যবহার করে আস্তানা বানিয়ে সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। সেনাবাহিনী ধারনা করতেই পারেনি বাচ্চাদের একটি স্কুলকে আস্তানায় হিসেবে ব্যবহার করবে। তবে ঘটনাস্থলটি জনবসতি পূর্ণ হওয়ায় নিরীহ জনগণের হতাহতের আশঙ্কায় সেনাবাহিনী রাতে অভিযানে না গিয়ে ভোর হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এরপর শুক্রবার ভোরে সেনাবাহিনী যখন অভিযান পরিচালনা করে তখন পাশের আস্তানা থেকে সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর উপর ব্রাশ ফায়ার শুরু করে। সেনাবাহিনীও পাল্টা জবাব দেয়।

 

সূত্র আরো জানায়,গ্রামের নিরীহ পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের রক্ষার্থে সামরিক  অভিযান  পরিচালনা করতে সেনাবাহিনীকে বিশেষ সতর্ককর্তা অবলম্বন করতে হয়। সতর্কতা নিয়েই সেনা সদস্যরা পাল্টাগুলি বর্ষণ করতে থাকে। এসময় নিরীহ জনগনকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই সেনা সদস্য পায়ে ও হাঁটুতে হালকা গুলিবিদ্ধ হন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে স্থানীয় সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা সুস্থ  রয়েছেন।

 

এদিকে, সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের বেশকিছু সামরিক পোশাক ও সামরিক সরঞ্জাম ফেলে রেখে যাওয়া সেনাবাহিনী সদস্যরা উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সামরিক বাহিনী ব্যবহৃত  ৫সেট পোশাক, ১টি বেল্ট, সামরিক গোলা বারুদের কাজে ব্যবহৃত পোচ ১টি, চাঁদা আদায়ের ব্যাগ ১টি, বেসামরিক ব্যাগ ১টি এবং বেশ কিছু রশদ। উদ্ধারকৃত বিভিন্ন ডকুমেন্ট থেকে ইউপিডিএফের বিভিন্ন সমর কৌশল ও সামরিক পরিকল্পনার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে বলে সুত্রটি নিশ্চিত করেছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল ও তার আশপাশ এবং পাশ্ববর্তী নানিয়ারচর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এখনো তল্লাশি অব্যাহত রেখেছেন।

 

অপরদিকে, একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়, অভিযানে গুলিবিনিময়ের সময় ইউপিডিএফ সদস্য  নিরেন্দ্র চাকমা (২৯) নামের একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

 

এদিকে, ইউপিডিএফের রাঙামাটি জেলা শাখার  প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের সম্পাদক বাবলু চাকমার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় সংগঠনের রাঙামাটি  ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা নিরাপত্তাবাহিনী এ ঘটনায় ১৪ জনকে আটক করেছে বলে অভিযোগ এনে নিন্দা  প্রতিবাদ জানিয়েছেন। প্রেস বার্তায় গ্রামবাসীদের নির্যাতন ও অন্যায় ধরপাকড় বন্ধ  ্এবং আটকৃকতদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।

 

আটককৃতদের মধ্যে নানিয়ারচর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যবৃষকেতু চাকমা, পূর্ণ চন্দ্র চাকমা(গ্রাম প্রধান), এডিশন চাকমাসহ ১৪ জনের নাম প্রেস বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত