পাহাড়ে উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় তুলা চাষ

Published: 29 Jun 2016   Wednesday   

পাহাড়ে উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় চাষ হচ্ছে তুলা। এখানকার আবহাওয়া তুলা উৎপাদনে উপযোগী হওয়ায় এবং লাভজনকের কারণে কৃষকদের মাঝে তুলা চাষের প্রতি দিন দিন অগ্রহ বাড়ছে। 

 

জানা যায়,পার্বত্য চট্টগ্রামে এক সময় কার্পাস তুলা উৎপাদিত হতো বলে এ অঞ্চলকে কার্পাস মহল হিসেবে পরিচিত ছিল। ব্রিটিশ শাসনের সময় বিভিন্ন কিছুর বিনিময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের উৎপাদিত এ কার্পাস তুলা নিয়ে যেত সে দেশে। এছাড়া আদিবাসীরা এ তুলা থেকে তৈরী বস্ত্র বুনন করে পরিধান করত। কিন্তু কালের বিবর্তনে আগের মত সেই তুলার চাষ ও উৎপাদন হয় না। তবে জুমিয়ারা এখনো জুম ধানের সাথে তুলা উৎপাদন করলেও লাভজনক এবং উৎপাদন না হওয়া চাষীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। ফলে কালের বির্তনে অনেকটা হারিয়ে যেতে বসেছে এ তুলা উৎপাদন।


এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রামে ঐতিহ্য আবারও ফিরিয়ে আনতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গা ইউনিয়নে সিবি-১২,১৩,১৪ এর প্রজাতির তুলা প্লট সৃজনের মাধ্যমে সমভূমির হাইব্রিট তুলা চাষে সাফলতা পেয়েছে। ইতোমধ্যে এ তুলা চাষে লাভবান হওয়ায় চাষীদের মাঝে এ হাইব্রিট তুলা চাষে ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে। এ চাষের জন্য তুলা উন্নয়ন বোর্ড থেকে চাষীদের মাঝে বিনামূল্য বীজ, সার ও কীটনাশক দেওয়া হয়।


তুলা উন্নয়ন বোর্ড কাপ্তাই ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, তুলা উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গা ইউনিয়নে প্লটের মাধ্যমে সিবি-১২,১৩,১৪ প্রজাতির সমভূমি তুলা তিন বছর ধরে চাষ করে আসছে। এতে ব্যাপক সফলতাও পাওয়া গেছে। গত বছর ২০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। সাধারনত জুলাইয়ের দিকে তুলা বীজ বপনের পর ডিসেম্বরের দিকে তুলা উত্তোলন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে তুলা উন্নয়নের বোর্ডের সহায়তা কাপ্তাইয়ের প্রায় একশ জন কৃষক এ তুলা চাষ করে আসছেন। এ চাষে পরিশ্রম এবং লাভজনক হওয়া দিন দিন কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।


সূত্র জানায়,পার্বত্য এলাকায় প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ১২ মণ তুলা উৎপাদিত হয়। তবে সমতল এলাকায় এ তুলা ২১ মন পর্ষন্ত উৎপাদিত হয়ে থাকে। এ তুলা কৃষকরা এক মণ বীজ তুলা দুই হাজার একশ টাকায় বিক্রি করতে পারছেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কাছে। স্থানীয় তুলা উন্নয়ন বোর্ড চাষী কাছ থেকে তুলা ক্রয় করে পার্শ্ববর্তী উপজেলা কাউখালীতে ফার্মে নিয়ে যায়। সেখানে তুলা থেকে সূতা বের করে বিভিন্ন স্থানে তা সরবরাহ করা হয়ে থাকে। দেশের স্পিনিং মিলে কাপ্তাইয়ের উৎপাদিত এ তুলর সূতা ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।


ওয়াগ্গা ইউনিয়নের তুলা চাষের চাষীরা জানিয়েছেন অল্প জায়গার মধ্য তুলা করা যায় এবং ভাল উৎপাদন হওয়ায় তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উৎপাদিত এসব তুলা ঘরে বসে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বিক্রি করা যায়। তাদের মতে, চাষীদের মাঝে আরও উৎসাহ সৃষ্টি করতে পারলে এ অর্থকরী ফসল তুলা চাষে ব্যাপক সফলতা লাভ করা সম্ভব।


তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কাপ্তাইয়ের কটন ইউনিট অফিসার মোঃ সফিকুর রহমান জানান, পাহাড়ের তুলার পরিবর্তে গত তিন বছর ধরে তুলা উন্নয়ন বোর্ড সমতলের হাইব্রিট তুলা চাষ করে আসছে। এতে ব্যাপক সফলতা পাওয়া গেছে এবং কৃষকরা এ চাষে লাভবান হওয়ায় তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

তিনি আরও জানান, এ হাইব্রিট তুলা চাষ পাহাড়ের জুম ধান  আদা-হলুদের সাথে চাষ করা যায়। তবে এ চাষে কিছুটা উৎপাদন কম হলেও প্রতি বিঘা থেকে ৭ থেকে ৮ মন তুলা পাওয়া যায়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত