বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু -কে সামনে রেখে রাঙামাটিতে বর্নাঢ্য কর্মসূচি শুরু

Published: 04 Apr 2016   Monday   

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত আদিবাসীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু -কে সামনে রেখে সোমবার থেকে  রাঙামাটিতে বিভিন্ন বর্নাঢ্য কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

 

আগামী ১২ এপ্রিল  থেকে  তিন দিন ব্যাপী শুরু হওয়া বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু-কে সামনে  রেখে   সোমবার সন্ধ্যায় রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিটিউটের  উদ্যোগে মেলার  উদ্ধোধক ও প্রধান অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ফিরোজা  বেগম চিনু।    ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাঙামাটি পার্বত্য  জেলা পরিষদ  চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমার সভাপতিত্বে  বিশেষ অতিথি  ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ  সামসুল আরেফিন।

 

বক্তব্যে রাখেন  জেলা পরিষদ সদস্য সাত্বনা চাকমা  ও জেলা  শিল্পকলা একাডেমীর সাবেক পরিচালক মুজিবুল হক বুলবুল।  স্বাগত বক্তব্যে  রাখেন রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত রুনেল চাকমা।

 

তিন  দিনব্যাপী মেলার মধ্যে রয়েছে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা,  চিত্র প্রদর্শনী, আদিবাসী খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক। এছাড়া  তিন ব্যাপী মেলায়  আদিবাসীদের  তৈরী পোশাক অলকার সামগ্রিসহ বিভিন্ন পণ্যর  স্টল  বসানো হয়েছে।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে  ফিরোজা  বেগম  চিনুএমপি বলেন, এখানকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের   সংস্কৃতি  ও পোশাকে যে বৈচিত্রতা রয়েছে   তা বিশ্বের  মধ্যে   ফ্যাশন  হিসেবে স্থান  পাবে।  পাহাড়ী-বাঙালী সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে যাতে পার্বত্য সংস্কৃতিকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি। 

 

তিনি  ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতিকে বিকাশিত করতে তা পক্ষ থেকে সকল সহযোগিতার আশ্বাস  দিয়ে আরও বলেন, সম্প্রীতি বজায় থাকলে সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে।  এ অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সবাইকে বজায় রাখতে পাশাপাশি এ অঞ্চলের কৃষ্টি সংস্কৃতির বিকাশে যে কোন উদ্যোগ নেওয়া হলে তাতে তার পক্ষ থেকে পরিপূর্ণ সহযোগিতা করা হবে।

 

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, আমরা যে যেই জাতিগোষ্ঠীর হইনা কেন সকলে মিলেমিশে সকলের উৎসব স্বানন্দে পালন করব। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। তিনি বলেন, কালের বিবর্তনে নৃগোষ্টীদের হস্তশিল্প কর্ম হারিয়ে যেতে  বসেছে। এ শিল্পগুলোকে আমাদের তুলে ধরতে হবে বিশ্ব বাজারে। হস্ত শিল্পের প্রসারে তিনি সমিতির মাধ্যমে জেলা পরিষদ কর্র্তৃক সর্বাত্বক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের স্থানীয় অধিবাসীদের নিজস্ব তৈরী হস্তশিল্প নমুনা পাঠানোর জন্য আমেরিকা রাষ্ট্রদূত এর পক্ষ থেকে পত্র পাঠানো হয়েছে। এসব পণ্য যদি তাদের পছন্দনীয় হয় তবে তাদের বাজাররেও বাজার করনের উদ্দ্যেগ নিবেন তারা।

 

উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামের (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) এগার ভাষাভাষি চৌদ্দটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আদিবাসী জাতিসত্তার বসবাস। এসব সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব হচ্ছে  বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু।

 

পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত আদিবাসীদের এই উৎসবটি উচ্চারনগতভাবে বিভিন্ন নামের পালন করলেও এর নিবেদন ও ধরন কিন্তু একই। তাই এ উৎসবটি আদিবাসী পাহাড়িদের শুধু আনন্দের নয়, সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক, ঐক্য ও মৈত্রী বন্ধনের প্রতীকও বটে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত