মঙ্গলবার রাঙামাটির সাপছড়ির মধ্য পাড়ার মাতৃভাষায় পাঠদান কেন্দ্র ফুলবারেং প্রি-স্কুল পরিদর্শন করেছেন সেভ দি চিলড্রেন-এর উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল।
সেভ দি চিলড্রেন-এর অর্থায়নে পরিচালিত ও আশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের বাস্তবায়নে সাপছড়িস্থ “ফুলবারেং প্রি-স্কুলে” পরিদর্শণ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সেভ দি চিলড্রেন-এর পরিচালক এলিজাবেথ অ্যান পিয়ার্স। এসময় তার সাথে ছিলেন সেভ দি চিলড্রেন এর উপ-পরিচালক টিমোথি রেল্ডস হোয়াই, চীফ অব পার্টি লিয়ানা জ্যানিন, শিশুর ক্ষমতায়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মেহেরুন নাহার, আশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের নিবাহী পরিচালক বিপ্লব চাকমা ও কর্মসূচী পরিচালক এডভোকেট কক্সি তালুকদার।
প্রতিনিধি দলটি সাপছড়ি মধ্য পাড়ার “ফুলবারেং প্রি-স্কুলে” পরিদর্শণের সময় স্কুলের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন।
এসময় তারা বলেন, শিশুরা তাদের নিজ ভাষায় পাঠ শুরু করায় অনেক বিষয় সহজে বুঝতে পারছে। পাশাপাশি, তাদের নিজস্ব বণমালার সাথে পরিচিত হতে পারছে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য তৈরী হচ্ছে। তাঁরা আরো বলেন, নিজস্ব বর্ণমালায় লেখাপড়া করার পড়ার পর তা ধরে রাখার জন্য পারিবারিক ও সামাজিক উদ্দ্যোগ প্রয়োজন।
আশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র জানায়,সেভ দি চিলড্রেন এর আর্থিক ও কারিগরিক সহযোগিতায় আশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র রা্ঙামাটি সদর উপজেলা ও কাউখালী উপজেলায় ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে প্রকল্প কার্যক্রম শুরু করে।এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র চার বছর বয়স থেকে প্রাক-প্রাথমিক প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হয়।
শিশুদের মাতৃভাষায় মৌখিকভাবে শিখন কার্যক্রম ছাড়াও ৩০টি বিষয়কে সামনে রেখে তাদের পাঠ্যক্রম সাজানো হয়েছে। এছাড়া উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয় বিষয় ভিত্তিক ছবি, ছবি নিভর ধারাবাহিক গল্প, শোনার গল্প, ধারাবাহিক ছবি সহ বিভিন্ন খেলনা। ধীরে ধীরে মাতৃভাষায় লেখার কাজও শুরু হরা হয়, যা চলতে থাকে ১ বছর। প্রথম বছরের শেষ ৩ মাস কিছু কিছু বাংলা ভাষার সাথে পরিচিত করানো হয়।
৫ বছর বয়সে ভর্তি করা হয় প্রাক-প্রাথমিক দ্বিতীয় শ্রেণীতে। যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি জন্য শিশুদের তৈরী করা হয়। মাতৃভাষা সাথে বাংলা ভাষার সেতুবন্ধন তৈরী করা হয় যেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ভাষাগত সমস্যার মুখোমুথি হতে না হয়।
জানা যায়,২০১৫ সাল থেকে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলায় চাকমা ভাষার ৫টি এবং কাউখালী উপজেলায় মারমা ভাষার ৫টি মোট ১০টি মাতৃভাষা ভিত্তি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র চালু করা হয়, যাতে মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে মোট ১৫৯ জন শিশু। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম ও ২য় শ্রেণীর আদিবাসী শিক্ষাথীদের গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যালয়ের পাঠশেষে পাঠে সহায়তাও প্রদান করা হয়।
রাঙমাটি সদর উপজেলায় ৩টি পাঠদান কেন্দ্র এবং কাউখালী উপজেলায় ৭টি পাঠদান কেন্দ্র মোট ১০টি পাঠদান কেন্দ্র চালু করা হয়, যাতে পাঠে সহায়তা পাচ্ছে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ৩৫০ জন শিক্ষার্থী। এ বছর ২০১৬ সালে প্রকল্পের কাযক্রম সম্পসারণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তাছাড়া কাউখালী উপজেলায় আরো ৩টি মারমা ও ২টি চাকমা ভাষার প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র চালু করার জন্য জরিপ কাজ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও ৩টি রিসোস সেন্টারও চালু করা হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.