লামা উপজেলার রুপসীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকা কর্তৃক শনিবার ১২ ডিসেম্বর বার্ষিক পরীক্ষার বাংলা বিষয়ে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণীর প্রশ্নপত্র পরিবর্তন করে জালিয়াতির মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য রক্ষার্থে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে সরবরাহ করা প্রশ্নপত্র সরিয়ে রেখে নিজেদের করা প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নিয়েছে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ সুলতান আহাম্মদ ও সহকারী শিক্ষিকা নাদিয়া পারভীন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আভিভাবকদের অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী কামরুল হাসানের মা পারভীন আক্তার জানান, প্রথম দিনে ইংরেজী পরীক্ষায় শিক্ষকদের কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট না পড়া কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী ভাল পরীক্ষা দেয়ায় ইর্ষিত হয়ে এই কাজ করে শিক্ষকরা। বাহিরে পড়ে এমন শিক্ষার্থীরা ভাল রেজাল্ট করলে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য ভেস্তে যাবে বলে যথাযত কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার অনুমতি না নিয়েই প্রশ্ন পরিবর্তন করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সুলতান আহাম্মদ।
৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মা মরিয়ম আক্তার, ২য় শ্রেণী ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস মা পারভীন আক্তার, ২য় শ্রেণীর ছাত্রী শারমিন অভিভাবক নুরজাহান আক্তার, ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী আছিয়া আক্তার মা জামিরন, ৩য় শ্রেণী ছাত্র ফরিদুল হক ও ৪র্থ শ্রেণী ছাত্র মহিদুল হক এর পিতা মোঃ ফজলুল হক সহ অর্ধশত অভিভাবক অভিযোগ করেন, সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্ন করায় ছাত্র ছাত্রীরা ভাল পরীক্ষা দিতে পারেনি।
তাছাড়া শিক্ষকরা তাদের কাছে প্রাইভেট পড়া শিক্ষার্থীদের আগের দিন প্রশ্ন দিয়ে দিয়েছে। তাই বাংলা পরীক্ষায় শিক্ষকদের কাছে পড়া ৭৫জন ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া স্কুলের ৩৫০ জন শিক্ষার্থী ফেল করার আশংকা রয়েছে বলেন জানান। তাই বাংলা পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় সরকারী প্রশ্নমতে পরীক্ষা নিতে জোর দাবী করেন অভিভাবকরা। তারা তাছাড়া দুনীতিবাজ শিক্ষকদের শাস্তির দাবী জানান।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও ওয়ার্ড মেম্বার ওমর ফারুক বাবুর বলেন, প্রশ্নপত্র পরিবর্তন নিয়ে স্কুলে কোন মিটিং হয়নি এবং আমরা অবগত নই। তবে কিছু সংখ্যক অভিভাবক প্রশ্ন পত্র জালিয়াতি বিষয়ে আমাকে অভিযোগ করেছে।
বিকল্প প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণের সত্যতা নিশ্চিত করে বিদ্যালয়েরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সুলতান আহাম্মদ জানান, প্রথম দিন ইংরেজী পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার আশংকা থেকে আমরা এই কাজ করেছি। প্রশ্ন পরিবর্তনের বিষয়টি স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও উপজেলা শিক্ষা অফিস অবগত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে লামা উপজেলা শিক্ষা অফিসার যতীন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। যেহেতু আমি অবগত নই সেহেতু অনুমতি প্রদানের প্রশ্নই আসে না। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.