রাঙামাটির বরকল উপজেলার আইমাছড়া ইউনিয়নে সাইচাল আইমাছড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ রয়েছে চারটি। গত দুই বছর ধরে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র একজন। ওই একজন শিক্ষক হচ্ছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপম চাকমা।
শিক্ষক বিহীন ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক গত দুবছর ধরে একাই ১ম শ্রেণঋ থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পাঁচটি ক্লাসে প্রায় ৫০জন ছাত্র-ছাত্রীকে কোন মতেই পাঠদান করে যাচ্ছেন। যেখানে চারজন শিক্ষক পাঠদান দেয়ার কথা সেখানে একজন শিক্ষকের পক্ষে মানসম্মত পাঠদান দেয়া সম্ভব না হলেও নাম মাত্র পাঠদানের মধ্যে দিয়ে প্রধান শিক্ষক তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এছাড়াও মাসের প্রায় সময় প্রধান শিক্ষককে অফিসিয়াল কাজে বাইরে থাকতে হয় তাকে। সে সময়ে বিদ্যালয় থাকে তালা ঝুলানো। গত দুবছর ধরে এ অবস্থায় কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের অভিভাবকরা। তাই যতো দ্রুত সম্ভব বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মান সম্মত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করার দাবী অভিভাবকদের।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি রক্তোৎপল চাকমা জানান,১৯৬৫ সালে স্থাপিত এ বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষকের পদ থাকলেও একজন কিংবা দুজনের অধিক কোন সময়ে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষক যোগদান করেননি। কোন শিক্ষককে বদলি করে পাঠালে জেলা শিক্ষা অফিস বা জেলা পরিষদে গিয়ে তদবির করে বদলি বাতিল করে তাদের সুবিধামত স্থানে বদলি হয়ে চলে যান। এ বিদ্যালয়ে আসেন না। তাই এ বিদ্যালয়ে বরাবরের মত শিক্ষক শুন্য থাকে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপম চাকমা জানান, শিক্ষক দেয়ার ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু গত দুবছর ধরে কোন শিক্ষক বদলি কিংবা ডেপুটিশনে দেয়া হয়নি। বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও দপ্তরী না থাকায় তাকে একা সব কাজ করতে হয়।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আলতাব হোসেন বিদ্যালয়ে শিক্ষক শুন্যতার কথা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে একজন শিক্ষককে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই শিক্ষক কয়েক দিনের মধ্যে বিদ্যালয়ে যাবে বলে তিনি জানান। কয়েক দফা শিক্ষক নিয়োগের পরেও কেন? উপজেলার দূর্গম বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষক সংকট তা জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, উপজেলায় শিক্ষা কমিটি থাকলেও সেই কমিটির কোন ক্ষমতা নেই। শিক্ষকরা জেলা পরিষদে তদবির করে তাদের সুবিধামত বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে যান। তার কিছুই করার থাকে না। ফলে প্রত্যন্ত এলাকার বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষক শুন্য থাকে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তবে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। এর বেশী তিনি আর কথা বলতে রাজি হননি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.