ঢাকায় সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার এনসিটিবি ভবনে ঘেরাও কর্মসূচিতে ষ্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি নামে উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী বাদী কর্তৃক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবীতে বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করা হয়েছে।
সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা রাঙামাটির ব্যানারে জিমনেসিয়াম এলাকার রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে সমাবেশে রাঙামাটির সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী সুজন চাকমার সভাপতিত্বে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্যে দেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক রোমেন চাকমা,হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি শান্তিদেবী তংচংগ্যা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক সৌমিত্র চাকমা, মারমা ষ্টুডেন্ট কাউন্সিলের সদস্য উজাই মারমা, তংচংগ্যা ছাত্র কল্যাণ সংস্থার সদস্য সবুজ তংচংগ্যা। এর আগে একটি বিক্ষোভ-মিছিল জিনেমিয়াম চত্বর থেকে শুরু হয়ে জেলা পরিষদ কার্যালয় সামনে ঘুরে পুনরায় জিমনেসিয়াম এলাকার রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশে করায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের ওপর সমাবেশ করায় সড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। সমাবেশ শেষে হামলায় আহতদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার সরকার কর্তৃক বহন করা, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী জাতিসমূহের সঠিক ইতিহাস ও পরিচিতি তুলে ধরা ও সংবিধানে সকল আদিবাসী জাতিসমূহের স্বীকৃতি দিতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবীতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার বরাবর পাঁচ দফা সম্বলিত দাবী নামার স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা, পাঠ্যপুস্তকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গ্রাফিটি পুর্নবহাল এবং ঢাকায় মতো জায়গায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের বিচারের জন্য অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত কোন ধরণের আশ^াস পাওয়া যায়নি। যা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান চেতনার পরিপন্থি। আদিবাসী এবং সংখ্যালঘু জাতিসমূহের প্রতি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বারংবার আস্ফালনে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের উদাসীনতা অর্ন্তভূক্তিমূলক, বহুত্ববাদী, অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণে পথে সহায়ক নয়। ফলে ঢাকাসহ সারাদেশে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। বক্তারা হামলায় জড়িত উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী বাদী সংগঠন ষ্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, পাঠ্যপুস্তক থেকে বাতিলকৃত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি পুনর্বহালের দাবী জানান। অন্যথায় আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন তারা।
এদিকে, একই প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র জনতা। সকালে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা ছাত্র জনতা জড়ো হয়ে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি জেলা চেঙ্গী স্কয়ার ় হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে পুনরায় চেঙ্গী স্কোয়ার মোড়ে এসে সমাবেশ করে। এ সময় বক্তারা ঢাকা আদিবাসী ছাত্রদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষী ব্যাক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূল শাস্তি দাবী করেন। একি সাথে এনসিটিবির মুছে ফেলা গ্রাফিতিটি পুনঃ বহালসহ আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবী জানান।সাধারণ শিক্ষার্থী উক্যানু মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন হ্লাব্রে মারমা, নেপুলিয়া চাকমা,টুশিটা চাকমা,নয়ন ত্রিপুরা,বাবু চাকমা,নিশান চাকমা,অংশোয়েচিং মারমা প্রমূখ।
উল্লেখ্য, বুধবার বুধবার ঢাকায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে "আদিবাসী" শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি রাখা না রাখা বিক্ষোভ নিয়ে কর্মসূচি চলাকালে স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি নামে সংগঠনটি আদিবাসী শিক্ষার্থীদের হামলা প্রতিবাদে এই কর্মসূচী পালন করা হয়।
--সম্পাদনা/সিআর/হিলবিডি.