পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসকারীদের ঐতিহ্যবাহী খাবার এবং সংস্কৃতির প্রতিফলন- এ প্রতিপাদ্য ঘিরে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিনের ফুড এন্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যাল শুরু হচ্ছে। পার্বত্যাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাদ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির প্রতিফলন এবং সকল সম্প্রদায়ের মথ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সুদৃঢ়করণের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এ উৎসবের করছে।
এ উৎসব আয়োজনের লক্ষেসোমবার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কর্ণফুলী সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের সম্মানিত ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ (যুগ্মসচিব)। এসময় বোর্ডের সদস্য প্রশাসন মোঃ জসীম উদ্দিন (উপসচিব), জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাহেদুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী খাগড়াছড়ি মোঃ মুজিবুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী বান্দরবান মোঃ আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত ও নির্বাহী প্রকৌশলী রাঙামাটির তুষিত চাকমা, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিউল আজম, সিভিল ডিফেন্স এন্ড ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি গিয়াস উদ্দীন (লিডার), রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, জেলা রোভার স্কাউট সভাপতি নুরুল আবছার। সভার শুরুতে ফেস্টিভ্যালের প্রস্তুতিমূলক সভায় বোর্ডের উপ-পরিচালক মংছেনলাইন রাখাইন পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ফুড এন্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যালের যাবতীয় কার্যক্রমের অগ্রগতি বিস্তারিত উপস্থাপন করেন।
সভায় বলা হয়, ১ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় রাঙামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এতে গেস্ট অব অনার হিসেবে থাকবেন দীপংকার তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মশিউর রহমান, এনডিসি। এছাড়া ফেস্টিভ্যালে সরকারি অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত থাকবেন।
সভায় আরো বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) দেশের অন্যতম পর্যটন অঞ্চল। ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসকারী সকল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বাহারি খাবারের সমাহার, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণ করবে। এ অঞ্চলের বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী খাবারসহ কৃষ্টি ও সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটবে এবং এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার সুযোগ সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি এ ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে দেশের পর্যটন সম্পদের সম্ভাবনা প্রসারিত ও বিকশিত হবে। এছাড়া এ কার্যক্রমের মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসকারী সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ বন্ধন সুদৃঢ় হবে।
উক্ত ফেস্টিভ্যালে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চগ্যা, বাঙ্গালি, অহমিয়া, খেয়াং, খুমি, গুর্খা, চাক, পাংখোয়া, বম, লুসাই, রাখাইন এবং সাঁওতালসহ ১৬টি সম্প্রদায় অংশগ্রহণ করবে। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮.৩০ টা পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান চলবে। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে তিনদিন ব্যাপী সকল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী খাবারের বাহারি সমাহার এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। ফেস্টিভ্যালের মূল থিম হচ্ছে পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসকারীদের ঐতিহ্যবাহী খাবার এবং সংস্কৃতির প্রতিফলন।
সভায় বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাদ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির প্রতিফলন এবং সকল সম্প্রদায়ের মথ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সুদৃঢ়করণের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক আগামী ১ থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন দিন ব্যাপী ফুড এন্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করা হয়েছে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ফুড এন্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের উদ্যোগকে ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ফেস্টিভ্যাল কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার সহযোগিতার প্রদান করবেন মর্মে সভায় অবহিত করেন।
রাঙামাটি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাহেদুল ইসলাম বলেন, জেলা পুলিশ বিশেষ শাখা পক্ষ থেকে তিন দিনব্যাপী ফুড এন্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যালের আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবেন মর্মে সভাকে অবহিত করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.