পিসিপির রাঙামাটি শহর শাখার ২৫তম বার্ষিক শাখা সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন

Published: 18 Nov 2023   Saturday   

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বৃহত্তর আন্দোলনে ছাত্র সমাজ অধিকতর সামিল হউন- স্লোগানে শনিবার পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) রাঙামাটি শহর শাখার ২৫তম বার্ষিক শাখা সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন করা হয়েছে।


পিসপির রাঙামাটি শহর শাখার তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুপ্রিয় চাকমার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পিসিপি  শহর শাখার আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ম্যাগলিন চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি  ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল চাকমা।  বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি  জেলা কমিটির সভাপতি  অমিতাভ তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিপন ত্রিপুরা, পিসিপির জেলা শাখার সভাপতি  জিকো চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন  জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোনারিতা চাকমা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পিসিপির শহর শাখার সদস্য সুরেশ চাকমা। সম্মেলনের শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মবলিদানকারী সকল শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। 

 

আলোচনা সভা শেষে ম্যাগলিন চাকমাকে সভাপতি, সুরেশ চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক এবং সনেট চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৯ জন সদস্য বিশিষ্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম পিসিপির শহর শাখার কমিটি গঠন করা হয়। নবগঠিত কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করান পিসিপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মিলন কুসুম তঞ্চঙ্গ্যা।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুয়েল চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৬ টি বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে সরকার এখনো সমাধান দিতে পারেনি। চুক্তির এত পার্সেন্ট, এতটি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে এরূপ হওয়ার কথা ছিল না। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের তরুণ ছাত্রসমাজকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অমিতাভ তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চুক্তির আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অবস্থা ছিল চুক্তির পরবর্তী সময়ে এসেও সেই একই অবস্থা বিরাজমান রয়ে গেছে। আমরা আশা করেছিলাম চুক্তির পরে আমাদের যে মৌলিক অধিকার সেই অধিকার ফিরে পাবো, কিন্তু তা দেখা যায় না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পিসিপির কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপন ত্রিপুরা বলেন, আমরা রাজনীতি করছি  স্বাধীকার অর্জন, নিজেদের উন্নয়ন নিজেদের নিরূপণ করার লক্ষ্যে। রাষ্ট্রের শোষণের যে নীতিমালা সেটি আমাদের বুঝতে হবে। পিসিপি`র লক্ষ্য উদ্দেশ্য জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করা। কর্মীবাহিনীকে তা ছাত্র সমাজের কাছে  পৌছে দিতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পিসিপির জেলা শাখার সভাপতি জিকো চাকমা বলেন, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ একটি সংগ্রামের নাম, প্রেরণার নাম। ১৯৮৯ সালে ৪ঠা মে লংগদুতে সংঘটিত গণহত্যাটি পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে একটি জঘন্যতম ঘটনা। সেই গণহত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে পিসিপি`র জন্ম। দীর্ঘ ৩৫ বছর লড়াই সংগ্রামে অনেক পিসিপি কর্মীর জীবন দিতে হয়েছিল। ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মধ্য দিয়ে হারানো দিনগুলো স্মরণ করতে হবে।  সেই চুক্তিতে উপনিত হতে জুম্ম জনগণের সেই নিদারুণ ইতিহাস তা আমাদেরকে জানতে হবে।

 

তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করেছিলাম চুক্তি পরবর্তীতে এখানকার যেসকল সমস্যা সেসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু চুক্তির ২৬ টি বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও সেই আশা প্রত্যাশা আজ ব্যাহত হয়েছে। সেই চুক্তি বাস্তবায়নে তরুণ ছাত্র সমাজকে বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হতে হবে এবং যারা চুক্তিবিরোধী, যারা চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে বাঁধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সোনারিতা চাকমা বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে অনেক বাঁধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাচ্ছে এই পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ। মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে জানতে হবে, চিনতে হবে। তাঁর মতো সমাজের জন্য, জাতির জন্য এবং দেশের জন্য কাজ করতে হবে। এখন থেকেই যদি কাজ করতে না পারি ভবিষ্যতে জাতিকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
--প্রেস বিজ্ঞপ্তি। 




 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত