সামাজিক উৎসবকে ঘিরে রাঙামাটিতে ৫দিনের সাংস্কৃতিক মেলা শুরু

Published: 03 Apr 2023   Monday   

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু, সাংক্রান-কে সামনে রেখে সোমবার  থেকে রাঙামাটিতে ৫দিন ব্যাপী সংস্কৃতি মেলা শুরু হয়েছে। আগামী ১৩ এপ্রিল থেকে তিন দিন ব্যাপী শুরু হতে যাওয়া উৎসবকে ঘিরে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাড়ায়-মহল্লায় উৎসবের আমেজ বইছে।

প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রামের (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) ১৪টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আদিবাসী পাহাড়ি জাতিসত্তাদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব হচ্ছে বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক- বিষু-বিহু-সাংক্রান উৎসবটির উচ্চারনগতভাবে বিভিন্ন নামের পালন করলেও এর নিবেদন কিন্তু একই। তাই এ উৎসবটি পাহাড়িদের শুধু আনন্দের নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক, ঐক্য ও মৈত্রী বন্ধনের প্রতীকও বটে।  উৎসবের প্রথম দিনকে বলা হয় ফুল বিজু। উৎসবের দ্বিতীয় দিন মূল বিজু এবং তৃতীয় দিন হচ্ছে গজ্যাপজ্যা বিজু। 

উৎসবকে সামনে রেখে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে সংস্কৃতি মেলা উপলক্ষে সোমবার রাঙামাটি কলেজ  মাঠএলাকা থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি  প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়। পরে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করা হয়। পরে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে নৃত্য পরিবেশন করে। এর পর শুরু হয়  আলোচনা সভা। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি। এসময় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি রিজিয়নের কমান্ডার মোঃ ইমতাজ উদ্দীন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বিজিবির রাঙামাটির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল গাজী শহীদুল্লাহ,  রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য হাজী মুছা মাতব্বর প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন জেলা পরিষদ সদস্য ও মেলা কমিটির আহ্বায়ক রেমলিয়ানা পাংখোয়া।

সন্ধ্যায় পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া উদ্বোধনী দিনে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ৫ দিনের সংস্কৃতি মেলায় পাহাড়ী জনগোষ্ঠীদের নানার খাবার, ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র ও হস্ত শিল্প সামগ্রীসহ নানান  ষ্টল  প্রদর্শিত হচ্ছে। মেলায় প্রতিদিন সাংস্কৃতিক পরিবেশিত হবে।  


অনুষ্ঠানেপ্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু নামে পালন করা হয়। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির সংমিশ্রণে এই উৎসব এক বৈচিত্রময় রূপ ধারণ করেছে। এটা মূলত পুরোনো বছরকে বিদায় দেওয়া আর নতুন বছরকে বরণ করার জন্য পাহাড়ের নৃ-গোষ্ঠীদের উৎসব। এই উৎসব বয়ে আনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। থাকে না কোনো হিংসা-বিদ্বেষ। এ উৎসবের মধ্য দিয়ে আনন্দ উচ্ছ্াসের মধ্য দিয়ে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে যেখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে তাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি অমলিন থাকে, সমৃদ্ধি, বিকশিত করতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিকভাবে মনিটরিং করছেন। প্রধানমন্ত্রী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সংস্কৃতিকে বিকশিত করতে যে কোন জাতীয় অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের যাতে অংশ গ্রহন থাকে।  

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিঅর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : [email protected]
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত