পাহাড় ধসের শঙ্কায় আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে ঝুঁকিতে থাকা মানুষ

Published: 19 Jun 2022   Sunday   

টানা প্রবল বর্ষণে বাঘাইছড়ি, বরকলসহ রাঙামাটির বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ভারতের মিজোরাম থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী উপজেলা বাঘাইছড়ি এবং বরকলের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে। এদিকে, টানা পাহাড়ধসের শঙ্কায় জেলা প্রশাসনের তত্ত¡াবধানে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে পাহাড়েরর পাদদেশে ঝুঁকিতে থাকা শহর এলাকার মানুষজন। তাদের মাঝে খাবারসহ ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, টানা ভারি বর্ষণে সীমান্তবর্তী ভারতের মিজোরাম রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বেশ কয়েকটি নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।  এতে কাচালং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট বাজারের আশপাশের এলাকা, বাঘাইছড়ি পৌরসভা ও আমতলী ইউনিয়নের প্রায় ১০ টি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। মাছের ঘের ও ফসলের ব্যাপক তি হয়েছে। এছাড়া টানা বর্ষনে মারিশ্যা-দিঘিনালা সড়কসহ পাহাড়ি এলাকায় মাটি ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের প থেকে পাহাড়ে ঝুঁকিতে বসবাসকারী লোকজনকে সতর্ক করে মাইকিংয়ে প্রচারে নিরাপদ স্থানে বা আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে বলা হচ্ছে। উপজেলায় ১৪ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুর্গত লোকজন বাঘাইছড়ি পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের মাষ্টারপাড়া, পুরান মারিশ্যা, মধ্যমপাড়ার লোকজন আশ্রয় কেেেন্দ্র যাচ্ছেন।


বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সতকর্তার সঙ্গে প্রস্তুত রয়েছি। উপজেলার সবকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সীমান্তবর্তী অন্য উপজেলা বরকলের ভুষণছড়া, ছোটহরিণাসহ আশেপাশে নি¤œাঞ্চল উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া উজানের পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে কাপ্তাই, বিলাছড়ি, রাঙামাটি সদর, নানিয়ারচর, লংগদুসহ বিভিন্ন উপজেলার নিচু এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।  


এদিকে টানা বর্ষণে রাঙামাটি সদরে পাহাড়ের পাদদেশে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবারত লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে সতর্ক বার্তা জারি করে তা মাইকিংয়ে প্রচার করছে জেলা প্রশাসন। শহরে ২০টি আশ্রয় কেন্দ্রে খুলে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন ঝুঁকিতে বসবাসকারী লোকজন। শহরের রিজার্ভবাজার এলাকার প্রধান সড়ক, পাবলিক হেলথ এলাকা, তবলছড়ি, রুপনগর, ভেদভেদিসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। দুর্গত লোকজনের সহায়তায় জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে দেড়শ, টন চাল এবং নগদ ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এসব ত্রাণ সহায়তা দুর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. রোকন্নুজ্জামান।


জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, সদরসহ জেলায় সম্ভাব্য পাহাড়ধসের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে প্রস্তুতিমূলক সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যারা পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিতে বসবাস করছেন তাদেরকে নিরাপদ স্থানে বা আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে উঠতে বলা হয়েছে। শহর এলাকায় ২৯টি ঝুকিপূর্ণ স্থান শনাক্ত করা হয়েছে। ২০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। অব্যাহত টানা বর্ষণে যে কোনো মুহূর্তে পাহাড়ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে প্রয়োজনে জোর করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া দুর্গত লোকজনের মাঝে খাবারসহ ত্রাণসামগ্রি বিতরণ করা হচ্ছে। কাপ্তাই, বাঘাইছড়ি, বরকল, নানিয়ারচর ও কাউখালীসহ বিভিন্ন উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনের নিরাপত্তায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বলে দেওয়া হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত