পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি লামা সরকারি মাতামূহুরী ডিগ্রি কলেজেকে জাতীয়করণে গৌরবোজ্জল অবদান রাখায় কলেজের ছাত্র- শিক্ষক ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শনিবার এক বিশাল সংবর্ধনা ।
কলেজের শহীদ মিনার চত্বরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। লামা সরকারি মাতামুহুরী কলেজ এর অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, লামা-আলীকদম সেনা জোনের জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মাহাবুবুর রহমান পিএসসি, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল বরণ দাশ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল আজিজ, লামা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবু সালাম চৌধুরী, বান্দরবান জেলা পষিদের সদস্য লক্ষীপদ দাশ, মোস্তফা জামাল ফাতেমা পারুল, লামা থানা অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা সহ প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কলেজের সিনিয়র প্রভাষক বাবু অংথিং।
বাহাদুরর। সকাল থেকেই কলেজে উপচে পড়া ভিড়। লামা ও আলীকদম উপজেলা থেকে আসা শহস্রাধিক ছাত্র- অভিভাবক, শিক্ষক আর স্থানীয় মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। কখন আসবেন বীর বাহাদুর। এর মাঝেই চলে এলেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদু এমপি। পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলের উপস্থিত হলে একে একে ছাত্র- ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক ও ভক্তদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন।
এ দিকে কলেজের সংবর্তাধনা সভায় বীর বাহাদুরকে শুভেচ্ছা জানাতে চীন সফর পরিপূর্ণ না করে চীন থেকে ছুটে এলেন লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মাতামুহুরী কলেজের শহীদ মিনার উদ্বোধন, ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ছাত্রবাসের উর্দ্ধমুখী সম্প্রসারণ ও কলেজ অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণের কাজের ভিত্তি প্রস্তর করেন। এছাড়া সম্প্রতি সময়ে মাতামুহুরী কলেজে ১০টি প্রকল্পের বিপরীতে বাস্তবায়িত ২ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন। দুপুরে কলেজের সকল শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথিদের জন্য মধ্যহ্ন ভোজের আয়োজন করে। শেষে প্রতিমন্ত্রীর সৌজন্যে কলেজ শিক্ষার্থীদের উপস্থাপনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হয়।
বিকেলে প্রতিমন্ত্রী লামা পৌরসভা কার্যলয়ে লামা বাজারের সকল ব্যবসায়ীদের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন এবং উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত লামা বাজার সমিতি অফিস ও ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দ্বিতল বিশিষ্ট লামা বাজার পাবলিক টয়লেট এর চাবি হস্তান্তর করেন। কলেজের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পিদের সাথে বীর বাহাদুরও নিজে গান পরিবেশন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পাবর্ত্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বান্দরবানকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। আওয়ামীলীগ সরকার যদি ক্ষমতায় থাকে আর আমি বেঁচে থাকি তাহলে জেলার প্রত্যেকটি উপজেলার একটি করে সরকারি কলেজ করা হবে। আলীকদম সরকারি কলেজ স্থাপনের সকল প্রাথমিক কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে। এই জেলার শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার অর্জনের সকল ব্যবস্থা করে আমি সব সময় পাশে থাকব। ১৯৮৫ সালে শুরু করে আজ মাতামুহুরী কলেজ সব দিক থেকে পরিপূর্ণ। কলেজের উন্নয়নে আরো একাডেমিক ভবন, মিনি স্টেডিয়াম, হোস্টেল করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দেশের সব রেজিস্টার্ড, এমপিওভুক্ত এবং আবেদিত ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। তারপর ইউএনডিপি কর্তৃক সৃষ্ট তিন পার্বত্য জেলায় আরো ২৩৮টি বিদ্যালয়কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি করেছেন। ৩ হাজার মেগওয়াড বিদ্যুৎ নিজে যাত্রা শুরু করে আজ দেশের বিদ্যুৎ উদপাদনের ক্ষমতা ১৮ হাজার মেগওয়াড। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে সমুদ্র বিজয়ের পর এখন আমরা আকাশ বিজয় করেছি। পৃথিবীর উন্নয়শীল দেশের কাছে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রুল মডেল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধু এক সুত্রে গাঁথা। ১৯২০ সালে ১৭ মার্চে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে আমরা কখনো এই সোনার বাংলাদেশ আমরা পেতাম না। উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। উন্নয়ন কার্যক্রম গতিশীল করতে তিনি সকলের কাছে আবারো নৌকা মার্কায় ভোট চান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.