নব্য মুখোশ বাহিনী(গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ) ও এমএন লারমা গ্রুপের জনসংহতি সমিতির(সংস্কার বাদী) ৪ কর্মী দল ত্যাগ করে ইউপিডিএফে যোগদান করেছেন। তারা হলেন এমএন লারমা গ্রুপের জনসংহতি সমিতি থেকে ধর্মজয় ত্রিপুরা, শক্তি চাকমা ওরফে শান্ত, সমেন্টু চাকমা ও নব্য মুখোশ বাহিনী থেকে পাভেল চাকমা ওরফে রিটন।
শুক্রবার রাঙামাটির কতুকছড়িতে একটি গ্রামে সংবাদ সন্মেলনে এই ৪ কর্মী ইউপিডিএফে যোগদানের কথা জানিয়েছেন।
সংবাদ সন্মেলনে যোগদানকারী খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার বোয়ালখালী ইউনিয়নের নৌকাছড়া হেডম্যানপাড়ার বাসিন্দা শশী চরণ ত্রিপুরার ছেলে ধর্মজয় ত্রিপুরা বলেন, জেএসএস সংস্কার দল ছেড়ে এখন যোগ দিয়েছেন ইউপডিএফে। ত্যাগ করা দলটিতে ছিলেন গ্রুপের সার্জেন্ট।
তিনি আরো বলেন, জুম্ম জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে ২০০৭ সালে যোগ দিয়েছিলেন এমএন লারমা গ্রুপের জেএসএস (সংস্কার) দলে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তিনি বুঝতে পারেন তাকে যারা সংঘাতের পথে ঠেলে দিয়েছেন তারা শুধু ব্যস্ত ব্যক্তিস্বার্থে। নিরীহ মানুষের থেকে চাাঁদাবাজি করে ভারি করছেন নিজের পকেট। আর কর্মীদের ব্যবহার করা হচ্ছে ইউপিডিএফকে ধ্বংস করার মন্ত্রে প্রাণঘাতি সংঘাতে। চলছে জুম্ম দিয়ে জুম্ম ধ্বংসের খেলা। তার কথায় আদর্শের কোনো মিল নেই। এসব খুব খারাপ লাগত তার। অন্ধকার দেখতেন জীবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তাই অনিশ্চিত অন্ধকার পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পালিয়ে দল ছাড়েন। কিন্তু দল ছাড়ার কারণে জেএসএস সংস্কারেরা যেখানে পাবে সেখানে তাকে শেষ করার হুমকি দিচ্ছে। ফলে তৈরি হয় নিরাপত্তাহীনতা। তাই জীবনের নিরাপত্তায় রয়েছি।
রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের নানাক্রুম গ্রামের বাসিন্দা জ্যোতির্ময় চাকমার ছেলে শক্তি চাকমা বলেন, আগে ছিলেন ইউপিডিএফের সদস্য। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি অর্থ ও বিপুল সুযোগ-সুবিধা দেয়ার প্রলোভনে পড়ে যোগ দিয়েছিলেন জেএসএস সংস্কার দলে। এ ছাড়া বলা হয়েছিল তাকে জুম্ম জাতীয় স্বার্থের কথা। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন তাদের কথা ও আদর্শের কোনো মিল নেই। তাকে ব্যবহার করা হতো শুধু চাঁদাবাজি, অপহরণ আর প্রাণঘাতি সংঘাতে। এসব বুঝে জেএসএস সংস্কার ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। কিন্তু জীবনের নিরাপত্তাসহ জাতীয় স্বার্থে আবার যোগ দিয়েছেন ইউপিডিএফে।
একই কথা বলেন, নব্য মুখোশবাহিনী ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা রাঙামাটির নানিয়ারচরের সাবেক্ষং ইউনিয়নের বড়পুলপাড়ার বাসিন্দা সুকুমার চাকমার ছেলে সুমেন্টু চাকমা ও একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১৭ মাইল চিরঞ্জীব দজরপাড়ার বাসিন্দা মেইক্যে চাকমার ছেলে পাভেল চাকমা। তারা বলেন, নাম আলাদা হলেও জেএসএস সংস্কার এবং নব্যমুখোশ বাহিনীর সব কর্মকান্ড এক ও অভিন্ন। এছাড়া তারা বিপথগামী হওয়ার রোমহর্ষক ঘটনাবলির বর্ণনা দেন।
ইউপিডিএফ দাবী করেছে শুধু এ চারজন নয়- সম্প্রতি জেএসএস সংস্কারবাদী এবং নব্য মুখোশ বাহিনীর জাতীয় স্বার্থপরিপন্থী কর্মকান্ডে হতাশ হয়ে তাদের অনেক কর্মী স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন।
ইউপিডিএফের জেলা ইউনিট সংগঠক সচল চাকমা জানান, ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক এবং নিয়মাতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। জাতীয় ও জনগণের স্বার্থবিরোধী যে কোনো কর্মকান্ড ঘৃণা করে। যারা ভুল বুঝতে পেরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন তাদেরকে অভিনন্দন। পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.