সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুর কাদের এমপি বলেছেন,পাহাড়ে শান্তি চুক্তির পর শান্তি বিরাজ করলেও মাঝে মধ্যে শান্তি চুক্তি বিরোধী দুর্বৃত্তরা পাহাড়ে অশান্তি সূষ্টি করছে। তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলুন। তাদের কোন দল ও জাতির পরিচয় নেই।
তিনি পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি চুক্তির পর পাহাড়ে অনেক শান্তি বিরাজ করছে উল্লেখ করে আরো বলেন, অতীতে অনেক সরকার ক্ষমতায় ছিল। পাহাড়ের মানুষ অবহেলিত, উপেক্ষিত ছিল। পাহাড়ের ভাজে-ভাজে অনেক মায়ের কান্না মিশে আছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার পাহাড়ের মানুষকে ভালবাসেন। শেখ হাসিনা পাহাড়ের মানুষকে ভালবেসে শান্তি চুক্তি করেছে। শান্তি চুক্তির পর ব্যাপক উন্নয়ন ও শান্তি বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার বান্দরবানে বোমাং সার্কেলের ঐতিহ্যবাহী ১৪০তম রাজপূণ্যাহ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পুরাতন রাজার মাঠে অনুষ্ঠিত বোমাং সার্কেলের ১৭তম রাজা উচপ্রু’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, চট্টগ্রামে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবীর তালুকদার, বান্দরবান সেনা রিজিয়নের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল যুবায়ের সালেহীন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, জেলা পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা প্রমুখ।
এর আগে সকাল থেকে মানুষের পদচারণায় মুখর অনুষ্ঠান স্থলটি। অনুষ্ঠানের প্যান্ডেলে কানায় কানায় পূর্ণ মানুষ। বান্দরবান বোমাং সার্কেলের ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠ তখন শীতের মধ্যেও মানুষের উত্তাপ ছড়াচ্ছে। জুমের (পাহাড়ে বিশেষ কায়দায় চাষ) খাজনা আদায় উপলক্ষ্যে ঐতিহ্যবাহী রাজপূণ্যাহ মেলা (খাজনা আদায় মেলা) যুগ যুগ ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবছরও জাকজমকপূর্ণভাবে রাজপূণ্যাহ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ মেলা উপভোগ করতে দূর-দুরান্ত থেকে দেশি-বিদেশী পর্যটক এসেছে। হাজারো মানুষের সমাগম ঘটেছে রাজপূণ্যাহ মেলাতে। তিনদিনব্যাপি এই রাজপূণ্যাহ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
সকাল নয়টার দিকে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয়েছে দুপুর প্রায় একটার দিকে। ওই সময়ে সাধারণ উৎসুক মানুষের ভিড় আরো বেড়ে যায়। দুপুরের দিকে রাজা উচপ্রু অতিথিদের নিয়ে রাজবাড়ি থেকে মঞ্চে আগমন করেন।
এদিকে, মেলা উপলক্ষে বান্দরবানের হোটেল-মোটেল, কটেজগুলো পর্যটকে পরিপূর্ণ। কোনো হোটেল-মোটেল খালি নেই। রাজপূণ্যাহ মেলা উপলক্ষ্যে ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠে বসেছে পুতুল নাচ, যাত্রা, নাগরদোলা, বাহারী পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছে ছোট-বড় অসংখ্য দোকান।
বোমাং সার্কেল সুত্রে জানা গেছে, এটি ১৪০তম রাজপূণ্যাহ মেলা। রাজা উচপ্রু’র চতুর্থতম রাজপূণ্যাহ মেলা। বান্দরবান বোমাং সার্কেলে ১০৯টি মৌজা রয়েছে। এর মধ্যে বান্দরবান জেলায় ৯৫টি ও রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী ও কাপ্তাই মিলিয়ে ১৪টি মৌজা। ১৮৭৬ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে খাজনা আদায় উপলক্ষ্যে রাজপূণ্যাহ মেলা।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.