বান্দরবানের লামা উপজেলায় পৃথক দুটি স্থান থেকে দু ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার মোঃ জামাল উদ্দিনের(৩২) নামের একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এবং হারুনূর অর রশিদ(১৮) নামের অপর একজনকে গলিত লাশ উদ্ধার করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, লামা উপজেলা সদর থেকে ৫০কিলোমিটার দূরে আজিজ নগর ইউনিয়নের হিমছড়ি ও হরিন মায়া এলাকা থেকে শনিবার একটি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অন্যটি গলিত লাশ উদ্ধার করছে লামা থানার পুলিশ। পুলিশ এ সময় গুলিবিদ্ধ মোঃ জামাল উদ্দিনের মৃত দেহের পাশ থেকে একটি গাদা বন্দুক উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত জামাল উদ্দিন(৩২) পিতা-মৃত সৈয়দ হোসেন, সাং- হিমছড়ি, ১নং ওয়ার্ড, আজিজ নগর ইউনিয়ন। অপর লাশটি একই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের হরিন মায়া এলাকার কবির আহম্মদের ছেলে হারুনর অর রশিদ(১৮) বলে দাবী করছেন। শনিবার সকালে স্থানীয় লোকজন জামাল উদ্দিনের মৃত অবস্থায় লাশ দেখে স্থানীয় মেম্বার ও পুলিশে খবর দিলে লামা থানার সেকেন্ড অফিসার কৃষ্ণ কুমার দাশের নেতৃত্বে গলিত অবস্থায় একটি লাশ উদ্ধার করে। পরে গলিত লাশের সাথে লুঙ্গি ও গেঞ্জী দেখে এলাকার কবির আহম্মদ নামের এক ব্যাক্তি তার হারিয়ে যাওয়া ছেলে বলে দাবী করছেন। নিহত মোঃ জামাল উদ্দিনেরলাশের পাশে পড়ে থাকা দেশীয় একটি বন্দুকও উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত জামাল উদ্দিনের ভাই মোঃ ইলিয়াস ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোবারক হোসেন জানান, স্ত্রীর সাথে পারিবারিক বিরোধ চলছিল জামালের। ২০ দিন পূর্বে জামাল তার শশুর বাড়ি আমিরাবাদে গেলে তার স্ত্রী ও শশুর বাড়ির লোকজন জামালকে আটক করে এবং তার পুরুষত্ব শক্তি নেই বলে অভিযোগ তুলে এবং বিয়ের সময় দেয়া ৫০ হাজার টাকা ফেরত চায়। এ সংবাদ শুনে আজিজ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ আলী জামাল উদ্দিনের শশুর বাড়ীতে গিয়ে তাদের শর্তসাপক্ষে জামাল উদ্দিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। দিনমজুর জামালকে শশুর বাড়িতে সামাজিক ভাবে বিচার বসিয়ে অপমান করা এবং টাকা ফেরত দেয়ার সমর্থ না থাকায় অপমানে বন্দুক দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারনা করা করছে এলাকাবাসী।
অপরদিকি একই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের হরিণ মায়া এলাকার আবুল কাসেমের পাহাড় থেকে দুপুর দেড়টার দিকে গলিত আরেকটি লাশ উদ্ধার করে লামা সেকেন্ড অফিসার(উপ-পরিদর্শক) কৃষ্ণ কুমার দাশ। কংকাল হয়ে যাওয়া গলিত লাশের পাশে পাওয়া যাওয়া লুঙ্গি ও গেঞ্জি দেখে সনাক্ত করে তার হারিয়ে যাওয়া ছেলে মোঃ হারুন অর রশিদ(১৮) বলে দাবী করছে এলাকার কবির আহম্মদ। গেল ১১ জুলাই কবির আহম্মদ তার পুত্র সন্তান হারুনর রশিদকে খোঁজে না পাওয়ায় লামা থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। লামা থানার ডায়রী নং ৪৫৫/১৭।
আজিজ নগর পুলিশ ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ(আইসি) স্বপন সাহা জানান, খবর পেয়ে হিমছড়ি এলাকা থেকে বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জামাল উদ্দিনের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহের পাশে একটি গাঁদা বন্দু পাওয়া যায়। এ লাশটি উদ্ধারের চলাকালে ৫ ওয়ার্ডে আরেকটি লাশের সংবাদ আসে।
লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক কৃষ্ণ কুমার দাশ ও তমেজ উদ্দিন জানান, , লামা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে আজিজনগর হিমছড়ি ও হরিন মায়া এলাকা থেকে এ দু`টি লাশটি উদ্ধার করি। লাশটির প্রাথমিক সুরতাহাল রিপোর্ট করা হয়েছে।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, নিহত জামাল উদ্দিনের বুকে গুলি বিদ্ধের চিহ্ন রয়েছে এবং অপর লাশটি গলিত অবস্থায় উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তাদের ময়না তদন্তের জন্য লাশ জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.